মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের সম্মাননা প্রদান/ছবি-সংগৃহীত
‘দক্ষতা নিয়ে যাবো বিদেশ, রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
১৮ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরের জি টাওয়ারের হলরুমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান এবং দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের আরও কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করা। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মাননা প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার অভিবাসন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর স্থানীয় প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কূটনীতিক, প্রবাসী বাংলাদেশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, পেশাজীবী, শ্রমিক, কমিউনিটি নেতা, মালয়েশিয়ান নাগরিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, প্রবাসী সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মনজুরুল করিম খান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) মালয়েশিয়ার চিফ অব মিশন হেবা আব্দেল লতিফ, সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন (সকসো) মালয়েশিয়ার ফরেন ওয়ার্কার্স ইউনিটের প্রধান হারিরি বিন হারুন, ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারিং-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট দাতো নাথান কে সাপি, কনস্ট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ (ক্লাব)–এর সিইও দাতো রফিক, সিবিএল মানি ট্রান্সফার মালয়েশিয়ার প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান ফারাজী এবং প্রবাসী কর্মীদের প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনায় বক্তারা মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও পেশাগত দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, কর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মালয়েশিয়া সরকার, নিয়োগকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
হাইকমিশনার মনজুরুল করিম খান চৌধুরী দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান তুলে ধরে তাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আন্দোলনরত ছাত্র-শ্রমিক-জনতাকে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে।

হাইকমিশনার আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কার্যকর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে অংশগ্রহণের জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে সহায়তার জন্য প্রবাসীদের পেশাজীবী, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।
সম্মাননা প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সাফল্য যেমন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে, তেমনি বাংলাদেশ–মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও নতুন মাত্রা যোগ করে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।
এমআরএম/এএসএম