ভিডিও EN
  1. Home/
  2. তথ্যপ্রযুক্তি

সব কাজে এআই ব্যবহার করে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছেন না তো?

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:২৮ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই এখন আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। সারাক্ষণ কোনো না কোনো কাজে ব্যবহার করছেন এআই। কখনো লেখালেখি, তথ্য খোঁজা, আইডিয়া তৈরি কিংবা দৈনন্দিন কাজের সমাধানে এআই ব্যবহার করছেন।

বিশেষ করে ‘জেন-জি’ প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা এআইয়ের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। নিঃসন্দেহে বলতে হয়, এআই আমাদের জীবনকে অনেক সহজ এবং গতিময় করেছে। তবে সমস্যার শুরু হয় তখনই, যখন এই প্রযুক্তির উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এআই-এর অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা এবং চিন্তাশক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

একটি গবেষণায় ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী ৫৪ জন শিক্ষার্থীকে রচনা লেখার কাজ দেওয়া হয়। তাদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলকে বলা হয় চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে লিখতে, দ্বিতীয় দলকে দেওয়া হয় গুগল এআই ব্যবহারের সুযোগ, আর তৃতীয় দলকে কোনো এআই ছাড়াই নিজে ভেবে রচনা লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সময় তাদের সবার মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ইইজি মেশিনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যা মূলত মস্তিষ্কের তরঙ্গ ও সক্রিয়তা পরিমাপ করে।

ফলাফল ছিল বেশ বিস্ময়কর। যারা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে রচনা লিখেছেন, তাদের ক্ষেত্রে চিন্তা ও বিশ্লেষণমূলক মস্তিষ্কীয় কার্যকলাপ তুলনামূলক কম দেখা গেছে। গুগল এআই ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে, যদিও চিন্তাশক্তির ব্যবহার কিছুটা বেশি ছিল। কিন্তু যারা কোনো এআই ব্যবহার না করে নিজে চিন্তা করে লিখেছেন, তাদের মস্তিষ্ক ছিল সবচেয়ে বেশি সক্রিয় এবং তাদের লেখাতেও চিন্তার গভীরতা ও মৌলিকতা বেশি পাওয়া গেছে।

অর্থাৎ গবেষণা বলছে, এআই-এর উপর যত বেশি নির্ভরশীলতা তৈরি হয়, মানুষের নিজস্ব চিন্তা, বিশ্লেষণ ও সৃজনশীলতার ব্যবহার তত কমে যেতে পারে। তবে এর অর্থ এই নয় যে এআই ব্যবহার করা উচিত নয়। বরং এআই একটি শক্তিশালী এবং সহায়ক প্রযুক্তি, যা শেখাকে সহজ করে, সময় বাঁচায় এবং কাজের গতি বাড়ায়। সমস্যা তখনই হয়, যখন আমরা নিজেরা চিন্তা না করে প্রতিটি কাজের জন্য এআই-এর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়ি।

দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক সক্রিয়তা কমে যেতে পারে, সৃজনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং সমস্যার সমাধান খোঁজার দক্ষতাও ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে। আসলে এআই আমাদের শত্রু নয় বরং এক মূল্যবান সহকারী। তবে এর ব্যবহার হতে হবে সচেতন ও সীমিত। এআই ব্যবহার করবেন, কিন্তু নিজের মস্তিষ্ককে অবহেলা করবেন না। কারণ মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি তার চিন্তাশক্তি আর সেটিকেই সক্রিয় ও জীবন্ত রাখা সবচেয়ে জরুরি।

আরও পড়ুন
সোশ্যাল মিডিয়া নজর রাখছে আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও
এআই দিয়ে বানানো নাকি আসল ছবি চিনবেন যেভাবে

সূত্র: সিএনএন, মিডিয়াম

কেএসকে

আরও পড়ুন