ব্যাংকের বিজ্ঞাপন বন্ধের প্রস্তাব প্রত্যাহার চায় এডিটরস গিল্ড
ব্যাংকের ব্যয় কমানোর নামে পত্রিকা (প্রিন্ট ও অনলাইন) ও টেলিভিশনে সব প্রকার বিজ্ঞাপন প্রদান বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। এমন প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন গণমাধ্যম কর্মীরা। তাই গণমাধ্যমবিরোধী এমন প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি করেছে সম্পাদকদের সংগঠন ‘এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ’।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিএবিকে বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখার প্রস্তাব প্রত্যাহারের চিঠি দিয়েছে এডিটরস গিল্ড। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু।
তিনি বলেন, কোনো সংস্থা থেকে ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা মিডিয়ার সাথে বৈরি আচরণ, যেটা খুবই হতাশাজনক। বিএবিকে তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের জন্য আমাদের সংগঠন থেকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি তারা গণমাধ্যমবিরোধী প্রস্তাব থেকে সরে আসবে।
বিএবিকে দেয়া এডিটরস গিল্ডের চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেওয়াসহ একগুচ্ছ প্রস্তাবনা তৈরি করে তা সদস্যদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। টেলিভিশন ও সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাবনাটি আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। গণমাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা সংস্থা বিজ্ঞাপন দেয় তার নিজস্ব প্রচারের জন্য এবং সেই গণমাধ্যমে গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে।
বাংলাদেশের মত দেশে ব্যক্তি খাতের বিকাশে বিশেষ করে আর্থিক খাতের সমৃদ্ধিতে বরাবর ভূমিকা রেখে আসছে গণমাধ্যম। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে এর আইনি সুরক্ষায় সব সময় ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও কর্মীদের পাশে থেকেছে গণমাধ্যম ও সাংবাদিক সমাজ। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সৌজন্যে দেশের নানা প্রান্তে অজস্র সৃজনশীল কর্মকাণ্ড চলছে। এগুলো গণমাধ্যমের মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হচ্ছে। গণমাধ্যম ও আর্থিক খাতের পরস্পরের মধ্যে যখন এমন হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তখন এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের শংকিত করে, গণমাধ্যমের উদ্যোক্তা ও কর্মীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করে। আমরা মনে করি এ ধরনের উদ্যোগ সমাজের দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি করবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘ সাধারণ ছুটিতে কবে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় আমরা আবার অবগাহন করতে পারবো, কবে ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আপনাদের মতো আমরাও এ নিয়ে চিন্তিত। করোনাভাইরাসের লাল চোখ আমাদের সবাইকে শংকিত করছে। প্রতিটি খাত সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক খাতের সংকটে গণমাধ্যম আগে যেমনি পাশে ছিল এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে।
‘ব্যাংকিংয়ের মত অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী একটি খাত থেকে এমন একটি সিদ্ধান্ত এলে অন্যান্য খাতও এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত হবে। যা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে। আশা করছি পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বিএবি’—বলা হয় চিঠিতে।
এসআই/এইচএ/এমকেএইচ