মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতককে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা


প্রকাশিত: ০২:৩৪ পিএম, ০১ আগস্ট ২০১৫

মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতকটি এখন হাসপাতালের ‘ভিভিআইপি’ রোগী। ওই নবজাতককে বাঁচাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের একাধিক বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়রা সাতদিন যাবৎ প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বর্তমানে শিশুটিকে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনদিন আগে অস্ত্রোপচারের পর থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকসহ প্রয়োজনীয় সব ওষুধে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে চিকিৎসকরা শিশুটির প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখছেন বলে জানা গেছে।

ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলি জাগো নিউজকে বলেন, নবজাতকের শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় এখন ভাল। ওজন ২ কেজি থেকে বেড়ে আড়াই কেজি হয়েছে। রক্তে সিরাম বিলুরুবিনের (জন্ডিস) মাত্রা ১৭ থেকে নেমে ১৩ হয়েছে। ফটোথেরাপির মাধ্যমে তার জন্ডিস কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রক্তে সিরাম বিলুরুবিনের মাত্রা এক থাকলে সেটিকে স্বাভাবিক মাত্রার বলা হয়।

শিশুটিকে শনিবার বেশি পরিমাণে মায়ের বুকের দুধ খেতে দেয়া হয়েছে। আগের দিন তাকে প্রতিবার ২ মিলিগ্রাম করে দেয়া হলেও শনিবার ৫ মিলিগ্রাম করে দুধ খাওয়ানো হয়েছে। বিভিন্ন সূচকে উন্নতি হলেও এখনো সে শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানান ডা. কানিজ হাসিনা শিউলি।

অস্ত্রোপচারের পর শনিবার পর্যন্ত মাত্র তিনদিন অতিবাহিত হয়েছে। সাতদিন না গেলে সংক্রমণমুক্ত হয়েছে এমন বলা যাবে না। তবে ঢামেক চিকিৎসক নার্সসহ সকলেই এই নবজাতককে নতুন জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটির প্রতি ডাক্তার নার্স ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিয়মিত খবর রাখছেন। গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে সব সময় অপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে সর্বশেষ অবস্থা জানাচ্ছেন।
 
বর্তমানে শিশুটির মা নাজমাও পাশাপাশি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। পাশাপাশি থাকলেও এখনো তাদের দেখা  হয়নি। তবে মোবাইলে তোলা মেয়ের ছবি দেখেছেন নাজমা বেগম। সংক্রমণের আশঙ্কায় মা মেয়েকে সামনা-সামনি আনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে টানা আট ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা পৌঁছে গুলিবিদ্ধ মা নাজমা। দীর্ঘ পথ এসে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভাল বলে জানা গেছে।

সাতদিন পেরিয়ে গেলেও মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতকের নাম এখনও রাখা হয়নি। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে এখনো তার নাম বেবি অব নাজমা লেখা রয়েছে।

শুক্রবার জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক ডা. শিউলীর কাছে শিশুটির কোনো নাম রাখা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নাম রাখা হয়নি। বুলেটবিদ্ধ হয়েও বেঁচে আছে তাই তাকে দুষ্টুমি করে বুলেট কন্যা নামে ডাকা হয় বলে জানান তিনি।

গত ২০ জুলাই মাগুরাতে যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয় এই শিশু।

এমইউ/এসআইএস/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।