‘করোনা পুঁজি করে বাজার অস্থিতিশীল করলে সরকার বসে থাকবে না’
করোনার কারণে খাদ্য সংকট হবে না জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সুতরাং অনেক খাদ্য কিনে মজুত করারও প্রয়োজন নেই।’
কোনো ব্যবসায়ী, মিলার করোনাকে পুঁজি করে যদি বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তাহলে সরকার চুপচাপ বসে থাকবে না বলেও সাবধান করে দেন তিনি।
বুধবার (১৮ মার্চ) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলমান বাজার মনিটরিং বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। পুরো বিশ্বই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, বাংলাদেশও হয়েছে। করোনা ভাইরাসের জন্য চাল-গম নিয়ে ভোক্তারা যেন আতঙ্কিত না হয়। কোনো ব্যবসায়ী, মিলার এটটাকে যদি পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে, বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, কোনোক্রমেই সরকার চুপচাপ বসে থাকবে না। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। শুধু মজুদই নয় আমরা ওএমএসে চাল বিতরণের জন্য মিলারদের চিঠি দিয়েছি। তারা নিয়ে বাজারে বিক্রি করবে এবং আমাদের আটার বিক্রয় সবসময় চলছে, চলবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ব্যবসায়ী-মিলারদের উচিত মানবতার প্রশ্নে আরও মানুষের সেবা দান করা। সেখানে যদি কেউ এটা নিয়ে বাড়তি সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে, খাদ্য মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে নজর রাখবে। আমরা আরও মনিটরিং জোরদার করছি। সামনে রোজাকে সামনে রেখে যাতে কোনো প্রকারের অবৈধ ব্যবসা কেউ করতে না পারে, আমরা সে ব্যাপারে সচেষ্ট আছি। ভোক্তাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ মজুদ রেখে কষ্টে ফেলার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ আমরা বাইরে থেকে চাল আমদানি করব। চালের দাম আমরা বাড়তে দেব না।’
যারা বেশি খাদ্য সংগ্রহ করছে সে বিষয়ে করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের বলতে চাই, চালের কোনো সংকট নেই। অযথা বাড়তি চালক্রয়ের প্রয়োজন নেই। ব্যবসায়ীরা বাজে কথা বলে করোনার অজুহাত দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমাদের ২৫টি মনটরিং টিম আছে। প্রয়োজনে তা আরও বাড়াব। এটা শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয় নয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর সেলও মনিটরিং করছে। আমরা শক্ত অবস্থানে আছি।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৪৯৫ খাদ্যশস্য মজুদ আছে। যার মধ্যে গম ৩ লাখ ১৯ হাজার টন, বাকি সব চাল। গত বছর মজুদ ছিল ১৫ লাখ ৪৪ হাজার টন।’
ওএমএস কবে থেকে চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওএমএস চলমান আছে। যেহেতু বাজারের মোটা চাল থেকে ওএমএসের চালের দাম বেশি তাই কেউ কেনে না। আমরা ডিলারদের বলেছি, তারা তুলে বাজারজাত করবে।’
বাড়তি খাদ্য বিক্রি না করার বিষয় ব্যবসায়ীদের কোনো বার্তা দেবেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এই বার্তার চিঠি আমরা ইতোমধ্যে রেডি করেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ী এবং এফবিসিসিআই সব জায়গায় আজকে চিঠি দিয়ে দিচ্ছি। আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে পারলে কী ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে আপনারা তা জানতে পারবেন। যে শাস্তি হবে আপনারা বাহবা দেবেন। ২৫ দিন পর হাওরের ধান পাব, সুতরাং চিন্তার কোনো কারণ নেই।’
এমইউএইচ/জেডএ/এমএস