কেউ আতঙ্কিত হবেন না, ঘাবড়াবেন না : স্বাস্থ্য মহাপরিচালক
চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার প্রাদুর্ভাবের এই সংকট মুহূর্তকে জাতীয় দুর্যোগ ভেবে দূরে না থেকে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেছেন, সকল চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর পার্সোনাল প্রটেকটিভের (পিপি) সকল ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদফদরের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না, ঘাবড়াবেন না। কিটের অভাব হবে না, পিপিরও অভাব হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে আইইডিসার সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
ইতোমধ্যে রাজশাহী মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, তারা করোনা-সংক্রান্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বিরত থাকবেন। স্পষ্ট করে যদি বলেন, আসলে চিকিৎসকদের জন্য পিপি আছে কি না? প্রস্তুতিই বা কতটুকু? অনেক হাসপাতালে করোনো লক্ষণ রয়েছে-এমন রোগী দেখলেই চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন না-এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্পষ্ট বক্তব্য কী জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রথমত বলব, আমাদের যারা চিকিৎসক ভাইবোনেরা আছেন, নার্স ভাইবোনেরা আছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন, সবাইকে আমি অনুরোধ করব-এটা হচ্ছে জাতীয় দুর্যোগ এবং আমাদের দায়িত্ব হলো চিকিৎসা দেয়া। সেই লক্ষ্যেই আমরা মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় যে নিরাপত্তা বিধান, পোশাক বা অন্যান্য যে সমস্ত জিনিস তা আমরা সরবরাহ করছি। আমরা এ কথা বলতে পারব না, তিন মাসের পিপি মজুত আমাদের কাছে আছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহের কিংবা দৈনিকভিত্তিতে তাদের নিরাপত্তা সব ধরনের ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদফতরের রয়েছে।’
‘যেগুলো আছে সেগুলো আমরা সরবরাহ করছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গতকাল ৫০০ পিপি দেয়া হয়েছে। একদিনে তো ৫০০ পিপি শেষ হওয়ার কথা না। আজকেও সকাল বেলা সিএমএইচে (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) খবর নিয়েছি, সকালে তারা ১০ হাজার পিপি সংগ্রহ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি নির্দেশ দিয়ে এসেছি, আমাদের যে বাসগুলো যায়, (সেগুলোতে করে এসব সুরক্ষা সামগ্রী) বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেব। সিএমএইচ সকালবেলা দুই হাজার কিট সংগ্রহ করেছে। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে এক লাখ কিট সংগ্রহ করব।’
১০ লাখ পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, চিকিৎসা কেন্দ্রে এ ধরনের পিপির অভাব হবে না। অনেকে হয়তো ভয় পাচ্ছেন, অনেকের মধ্যে এই প্রবণতা থাকতে পারে, দূরে থাকার প্রবণতা। আমরা সকল চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুরোধ করব, বৃহত্তর মানবতার স্বার্থে সকলেই কাজে নিয়োজিত থাকবেন, কেউ বিরত থাকবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে সকল চিকিৎসক-নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর পার্সোনাল প্রটেক্টিভের বিষয়টি নিশ্চিত করব। নিরাপত্তা ছাড়া কাউকে আমরা রোগী চিকিৎসা দেয়ার কথা পরামর্শ দিচ্ছি না।’
করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী এবং তারা একই পরিবারের সদস্য। সবমিলিয়ে দেশে এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জনে দাঁড়াল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জেইউ/এসআর/জেআইএম