করোনা : আলাদা হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন কূটনীতিকরা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৯ এএম, ২৩ মার্চ ২০২০

ঢাকায় অবস্থান করা বিদেশি কূটনীতিকদের অভয় দিয়েছে সরকার। সরকার জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা ছড়ানো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে নানামুখী সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কূটনৈতিক জোন খ্যাত গুলশান-বনানী ও বারিধারা এলাকায় সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, কূটনৈতিক মিশন এবং কূটনীতিকদের বাসভবন এলাকায় বাইরের লোকজনের অবাধ যাতায়াতে বিধি-নিষেধ আরোপসহ সতর্কতামূলক বাড়তি ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও কোনো কূটনীতিক বা তাদের পরিবারের সদস্যের করোনা আক্রান্তের লক্ষণ স্পষ্ট হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে। কূটনৈতিক পরিবারের সদস্যদের জন্য বসুন্ধরা ও উত্তরা এলাকার একাধিক হাসপাতালে কিছু বেড-কেবিন এবং আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) নির্দিষ্ট করে রাখা হবে।

রোববার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ উদ্বিগ্ন ইউরোপের ৯ রাষ্ট্রদূতকে করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ইইউ রাষ্ট্রদূতদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে তারা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত উদ্বেগের কথাগুলোও জানিয়েছেন।
তারা জানতে চেয়েছেন ঢাকায় কোনো কূটনীতিক বা তাদের পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সরকার বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি-না। এ বিষয়ে সরকারের তরফে পররাষ্ট্র সচিব করোনা পরিস্থিতি এবং সরকারের প্রস্তুতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। সচিব উদ্বিগ্ন কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করে বলেন যে, দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যতিব্যস্ত থাকলেও সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি কোনো হেলা করছে না বরং তাদের বিষয়টি অগ্রধিকারে রয়েছে। কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের কারও করোনার লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ জরুরি সেবা নিশ্চিতে নির্দিষ্ট হাসপাতাল আগে থেকে প্রস্তুত থাকবে।

ব্রিফিং সূত্র জানায়, সেখানে কূটনীতিকদের দ্বিতীয় উদ্বেগ ছিল ইউরোপের সঙ্গে ঢাকার ফ্লাইট বন্ধ বিষয়ে। প্রশ্ন ওঠে ফ্লাইট বন্ধ থাকার ওই মুহূর্তে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে ইউরোপীয় কূটনীতিক, তাদের পরিবারের সদস্য এবং নাগরিকদের ঢাকা ছাড়ার ব্যবস্থা কী অবশিষ্ট থাকল? জবাবে সচিব স্পষ্ট করে বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেক দেশই নিজ নিজ বিবেচনায় কিছু উদ্যোগ এবং সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাংলাদেশ বৃটেন ছাড়া ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।

বিশ্বের সঙ্গে ঢাকার ফ্লাইট যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ নয় জানিয়ে সচিব বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে যাতায়াতের বিবেচনায় বৃটেন, চীন, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ান-ওই চারটি রুট চালু রাখা হচ্ছে। কেবল ইউরোপ নয়, যেকোনো অঞ্চলের কূটনীতিক, তাদের পরিবারের সদস্য এবং নাগরিকরা ওই রুট ব্যবহার করে পছন্দের গন্তব্যে যেতে পারেন। তাছাড়া তারা একসঙ্গে যেতে চাইলে এক বা একাধিক বিমান ভাড়া করতে পারেন। চাটার্ড ফ্লাইটে গ্রুপভিত্তিক এমন যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক সাপোর্ট এবং বিমান মন্ত্রণালয় কারিগরি সমর্থন দিবে বলেও নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র সচিব।

এ বিষয়ে এক দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের উদ্বেগ সংক্রান্ত বার্তা আমরা পেয়েছি। আমাদের অবস্থানও তাদের জানিয়েছি। আমরা তাদের দুটি অপশন দিয়েছি। এখনো খোলা এমন চার রুটের যেকোনো রুটে তারা ফিরতে পারেন। নতুবা নিজেরা চাটার্ড ফ্লাইট নিয়ে আসতে পারেন। আমরা তাদের ফ্লাইট পরিচালনায় অনুমতি দেব এবং সুবিধাদি নিশ্চিত করব।

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।