করোনা মোকাবিলায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার নির্দেশ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা করোনা মোকাবিলায় কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কমিটি করা হয়েছে যাতে বিদেশফেরত বা সংক্রমণের ঝুঁকিতে যারা আছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা যায়। একইভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদেরও একই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয় থেকে এক ভিডিও বার্তায় মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এছাড়াও তিনি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমও তুলে ধরেন। উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো হলো-
১. করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ ও মোকাবিলার লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন;
২. বিদেশফেরত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতসহ করোনা প্রতিরোধে কমিটিকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান;
৩. বিদেশফেরত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি নিশ্চিত করাসহ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদেরকে আবশ্যিকভাবে স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকা/কর্মস্থলে অবস্থান করত স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান;
৪. করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা সংক্রান্ত কার্যক্রমসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন, সমন্বয় ও নিবিড় তদারকির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের কর্মস্থলে অবস্থান করার নির্দেশনা প্রদান।
৫. টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার জন্য ব্যবহৃত স্থানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভবনগুলো প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ব্যবহার উপযোগী করা;
৬. সিটি করপোরেশন এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান-
> ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পরিচালিত ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশনে রাখার জন্য প্রস্তুত রাখা;
> সিটি করপোরেশন এলাকার সুবিধাজনক স্থানে জনগণের হাতধোয়ার জন্য প্রয়োজনীয় লিকুইড/সাবান এবং হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য স্যানিটাইজার রাখার নির্দেশনা প্রদান;
> ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক প্রচারণা (মাইকিং ও লিফলেট) এবং মাস্ক বিতরণ করা;
> যেকোনো প্রকার জনসমাগম রোধকল্পে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে ওয়ার্ডভিত্তিক তদারকি কার্যক্রম নিশ্চিত করা;
> সিটি করপোরেশন এলাকায় সম্প্রতি বিদেশফেরত কোনো ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা এবং তার পরিবারের সদস্যদের জনসম্মুখে না আসার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলরের নেতৃত্বে প্রচারণা চালানো। অবাধ্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
> করোনা প্রতিরোধে এবং যেকোনো প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা;
> সিটি করপোরেশনের আওতাধীন স্বাস্থ্যকেন্দ্র/হাসপাতাল জরুরি প্রয়োজনে প্রস্তুত রাখা;
> স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধীনস্থ দফতর/সংস্থার সাথে সমন্বয় নিশ্চিত করা এবং সকল নির্দেশনা/বিজ্ঞপ্তি যথাযথ অনুসরণ করা;
> ওয়ার্ডভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবীকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ও তাদের প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের মাধ্যমে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মতামত/পরামর্শ অনুসরণ করা;
> উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোয়ারেন্টাইন সুবিধা প্রদানের মতো উপযুক্ত স্থানের ব্যবস্থা রাখা;
> মুজিববর্ষ উপলক্ষে সকল সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থাপিত ক্ষণগণনা যন্ত্রের মাধ্যমে দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচারের নির্দেশনা প্রদান।
৭. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রেরিত সভার কার্যবিবরণী, নির্দেশনা ও বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদির আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দফতর/সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান। নির্দেশনা বাস্তবায়ন, মনিটরিং এবং সমন্বয় করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের মনিটরিং সেল গঠন।
৮. বিদেশি সংস্থার সাথে সভা ও বিদেশভ্রমণ স্থগিত রাখার বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং আওতাধীন দফতর/সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি। এ বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল নাগরিককেই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
এমইউএইচ/বিএ/জেআইএম