করোনার সংকটে শ্রমজীবীদের দুই মাসের রেশন-আর্থিক সহায়তার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২০

করোনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবন রক্ষায় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে ‘শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম’। প্রত্যেক শ্রমজীবীকে স্থানীয় সরকারের অফিসে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে দুই মাসের জন্য রেশন বা সমপরিমাণ আর্থিক সহায়তা এবং সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকদের অন্তত ৬০ দিনের বেতনের নিশ্চয়তা দিয়ে কর্মস্থল থেকে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশনার দাবি করেছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক হামিদা হোসেন স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ দাবির কথা জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, ‘লকডাউন’ তথা ঘরে থাকাই এ মুহূর্তে করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে থাকার একমাত্র উপায়। সে কারণে শ্রমজীবীদেরও ঘরে থাকা বাঞ্জনীয়। শ্রমজীবীরাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন। ফলে তাদের জন্য অবিলম্বে কয়েক স্তরে সুরক্ষা পদক্ষেপ দরকার।

বিশেষ করে একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি যে, ‘দিন আনি দিন খাই’ অবস্থায় ঘরে থাকা মানে না খেয়ে থাকা। ফলে করোনা পরিস্থিতি যাতে কোটি কোটি শ্রমজীবী পরিবারকে দুর্ভিক্ষাবস্থার দিকে ঠেলে না দেয় সে উদ্যোগ এখনই নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে চিন্তা করতে হবে দিনমজুরদের বিষয়।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের দাবি

১. জাতীয় স্বার্থে সবার ঘরে অবস্থানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমজীবীকে স্থানীয় সরকারের অফিসে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে দুই মাসের জন্য রেশন বা সমপরিমাণ আর্থিক সহায়তা দেয়া।

২. সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে যারা কাজ করেন, তাদের অন্তত ৬০ দিনের বেতনের নিশ্চয়তা দিয়ে কর্মস্থল থেকে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিতে হবে।

৩. করোনাভাইরাসের ঝুঁকি/প্রকোপ বিবেচনায় আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো শ্রমিককে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে বাধ্য না করা।

৪. প্রয়োজনে অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনায় মজুরিসহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে হবে।

৫. সাধারণ ছুটিতে যাবার সময়ে প্রত্যেক শ্রমিককে অগ্রিম মজুরি প্রদান।

৬. ব্যক্তিগত নিরাপত্তাবিষয়ক সচেতনতা ও নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি (মাস্ক, গ্লাভস্, স্যানিটাইজার) সরবরাহ করতে হবে।

৭. সাধারণ ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে প্রত্যেক শ্রমিক যেন নিজ নিজ নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের বর্তমান বাসায় অবস্থান করে তদবিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা ও নিয়মিত তদারকি করা।

৮. শুধু অনুপস্থিতির কারণে কোনো শ্রমিকের মজুরি কর্তন করা যাবে না বরং আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব শ্রমিকের মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।

৯. আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।

এ ছাড়া যেসব প্রবাসী দেশে আসছেন- তাদের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসা ও প্রয়োজনে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করাও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংগঠনের আহ্বায়ক হামিদা হোসেন বলেন, রাষ্ট্রকেই দিনমজুরধর্মী পেশাজীবীদের রেশন বা আর্থিক সহায়তার সরাসরি দায়িত্ব নিতে হবে এবং মজুরিভিত্তিক শ্রমজীবীদের বেতনের বিষয়েও উদ্যোক্তাদের রাষ্ট্রের তরফ থেকে সহায়তা দিতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের সমগ্র পরিস্থিতি ত্রিপক্ষীয় মনিটরিং সেলের অধীনে তত্ত্বাবধানের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পক্ষ থেকে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে গৃহীত পদক্ষেপগুলো পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা এবং প্রয়োজনে জাতীয়ভিত্তিক বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে আপাতত এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা দরকার।

জেইউ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।