মোগো এখন ভাতের পয়সাও জোগাড় হয় না

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ২৯ মার্চ ২০২০

ভালো নেই সদরঘাটের নৌকার মাঝিরা। নৌকা চালিয়ে তারা এখন তিন বেলা ভাতের পয়সা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছেন। এছাড়াও রয়েছে মাসিক কিস্তি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে গত বুধবার থেকে সদরঘাটের সবকিছু বন্ধ। এরপর থেকে নৌকার যাত্রী কমে গেছে।যাত্রী কম হওয়ায় কমেছে ভাড়া।জীবিকার তাগিদে কোনো উপায় না থাকায় ঝুঁকির মাঝেও নৌকা চালাচ্ছেন তারা।এ অবস্থায় সরকার থেকেও তাদের সাহায্য করা হচ্ছে না।

dhaka0

রোববার (২৯ মার্চ) সকালে সদরঘাটের নৌঘাট ঘুরে দেখা যায়, অনেক নৌকার মাঝি বসে আছেন যাত্রীর অপেক্ষায়।যাত্রী আগের মত নেই।দুই একজন আসছেন। নৌকার সংখ্যা অনেক। এপার থেকে ওপার অথবা ওপার থেকে এপার পার হতে জনপ্রতি পাঁচ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে।আর যারা রিজার্ভ নিচ্ছেন তাদের জন্য বিশ টাকা।যাত্রীর চেয়ে নৌকা অনেক বেশি হওয়ায় বসে রয়েছেন অনেকেই।

কথা হয় সদরঘাটের তেলঘাটের নৌকার মাঝি সিরাজুজ্জামানের সঙ্গে।তিনি বলেন, ‘মোগো ছবি তুলে লাভ কী।মোগো তো এখন ভাতের পয়সা জগাড় হয় না।ছবি না তুইলা মোগরে সাহায্য করেন।তাহলে এ ঝুঁকির মধ্যে নৌকা চালামু না।’

ব্রিজ ঘাটের নৌকার মাঝি জাফর উদ্দিন বলেন, ‘আগে প্রতিদিন গড়ে আটশ থেকে একহাজার টাকা আয় হতো।এখন দুই থেকে তিন শত টাকা হচ্ছে।পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকার জিনজিরায় ভাড়া বাসায় থাকি।বাসা ভাড়া দিতে হয় পাঁচ হাজার টাকা।চার সদস্যের পরিবার।প্রতিদিন চাল লাগে দুই কেজি।বাজার লাগে দুইশত টাকার।ঘাটের খরচ আর আমার পকেট খরচ লাগে আরও একশত টাকা।সবমিলে দৈনিক ছয় থেকে সাতশত টাকা খরচ আছে।কিন্তু আয় হচ্ছে দুই থেকে তিনশত টাকা।

dhaka0

ওয়েজ ঘাটের নৌকার মাঝি হাসান রেজা বলেন, ভাই আমাদের তিন বেলা খাবারের টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছি। আগের মত আয় নেই।এরপর মাসে কিস্তি আছে।সব মিলে মহাবিপদে আছি।সরকার যদি খাবারের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে এই ঝুঁকির মাঝে নৌকা চালাবো না।

উল্লেখ্য, রোববার (২৯ মার্চ) বেলা ১২টার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হয়নি। শনিবারের মতো রোববারও দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা আগে যা ছিল তা-ই আছে। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮। সেইসঙ্গে কোভিড-১৯ সংক্রমিত মোট ১৫ জন সুস্থ আছেন বলে গতকালের মতো আজও জানানো হয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ৫ জনই আছে।

জেএ/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।