‘সকালে একটু চা খাইছি, দুপুরে কিছুই খাইনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০২০

তার কোমরের কাছে হাড় ভেঙে গেছে। দুই হাতের নিচে স্ট্রেচার। তারপরও অনেক কষ্টে খুব ধীরে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন বৃদ্ধা রোকেয়া বেগম। খুলনার কয়রা উপজেলা থেকে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন শবে বরাত, রমজানের দান-খয়রাতের টাকা যদি কিছু পান সেই আশায়।

আজ শবে বরাত, তবে টাকা-পয়সা কিছুই পাননি তিনি। এদিকে ঢাকায় আসার পরপরই করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। এখন রাজধানীতে তেমন মানুষও নেই, করোনার ভয়ে কেউ কাছেও যেতে চান না, তাই দান-খয়রাতও পান না এই বৃদ্ধা।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রোকেয়া বেগম বলেন, ‘দুপুরে কিছুই খাইনি বাবা। পাইনি কিছু। সকালেও কিছু খাইনি, একটু চা খাইছি। রাইতে খিচুড়ি দেয় রাস্তায়। রাত ৯টা বাজলেও দেয়, ১০টা বাজলেও দেয়। তখন খাব।’

ফুটপাতই রাতে ঘুমানোর আশ্রয় এই বৃদ্ধার। তিনি বলেন, ‘আর ওই রোডে ঘুমাই (কারওয়া বাজার মোড়ের রাস্তার ফুটপাত), যেহানে মেলা মানুষ থাহে। (আমি) এতিম মানুষ। কনতে (কীভাবে) দিবো বাসা ভাড়া?’

রোকেয়া বেগম বলেন, ‘কোমরের কাছে হাড় ভেঙে গেছে। পাকা রাস্তায় পা পিছলে পইড়ে গেছিলাম। গত বছরের চৈত (চৈত্র) মাসে ভাঙছে। তিন মাস বিছানায় শুয়ে ছিলাম। পায়ে বল পাই না। কবিরাজি ওষুধ দিলাম। এখন একটু ভালো। তবে পায়ে ভর দিতে পারি না। ব্যথা লাগে।’

ঢাকায় আসার কারণ জানিয়ে রোকেয়া বলেন, ‘মেলা দিন ধইরা আসি-যাই। সেদিন (কিছু দিন আগে) আইছি। রোজার মাস আইতেছে, শবে বরাত আইতেছে, যাই দেহি কয় টাকা হইলে (কিছু টাকা পেলে) তো ওষুধ-মষুধ কিনে খাইতে পারি।’

পিডি/এমএসএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।