তথ্য গোপন করে দাফন, একদিন পর জানল করোনায় মৃত্যু
সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত এক রোগী মারা যাওয়ার পর গোপনে মরদেহ বের করে দাফন করার অভিযোগ উঠেছে পরিবারের বিরুদ্ধে।
শুধু তাই নয়, ৬৩ বছর বয়সী ওই রোগী রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, এমন দাবি করায় গ্রামবাসী মিলে তাকে দাফন করেন। পরবর্তীতে ওই রোগীর করোনা পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ আসলে ঢাকা ও তার গ্রামের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহতের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ইসাপুরা ইউনিয়নে। তবে তিনি ঢাকার গেন্ডারিয়ায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।
বুধবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পেট ব্যথা বলে তাকে তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা তার শারীরিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ করেন দায়িত্বরত ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসক। পরে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ দিয়ে পাঠানো হয়।
এ দিন রাতেই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল্লাহ মারা যান। নিহতের নমুনা পরীক্ষা করে পরদিন (৯ এপ্রিল) তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
করোনার ফলাফল পাওয়ার আগেই ৮ এপ্রিল রাতে তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে গোপনে মরদেহ বের করে গেন্ডারিয়ার বাসভবনে নিয়ে যান এবং সেখানে গোসল করান। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকালে তারা মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে জানাজা পড়ে দাফন সম্পন্ন করেন।
গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজু মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় নিহতের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তিনি করোনা আক্রান্ত শুনে তার গেন্ডারিয়ায় বসবাসরত বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন জানান, বুধবার রাতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। সেখান থেকে তার পরিবার মরদেহ গেন্ডারিয়ায় নিয়ে গোসল করিয়ে সিরাজদিখানে তার স্থায়ী বাড়িতে নিয়ে আসে। তিনি হৃদরোগে মারা গেছেন বলে এলাকায় বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, যেহেতু স্বাভাবিক মৃত্যু সেহেতু বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) সকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জানাজা করে নিহতের দাফন সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এটা জানার পর নিহতের দাফন-কাফনে জড়িত লোকজনের ৮টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
জেইউ/এফআর/জেআইএম