গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪ জনের মৃত্যু, কার বয়স কত?
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন করোনা রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে একজন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন। এই চিকিৎসকের বয়স হয়েছিল মাত্র ৫০ বছর।
বাকি তিনজনের মধ্যে একজনের বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের ঘরে। তিনি আগে থেকেই ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। ক্যানসারের সঙ্গে করোনা যোগ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুবরণকারী বাকি দু’জনের বয়স ৭০ বছরের বেশি ছিল।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় করোনায় আক্রান্ত হলে বয়স্ক মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি থাকে। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, ক্যানসারসহ নানা রোগ ব্যাধিতে ভোগা ব্যক্তিরা করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। তাই এই শ্রেণির মানুষদের সবসময় নিরাপদে থাকা জরুরি।’
নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চারজন মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের বয়সভিত্তিক তথ্য হলো, ৭০ বছরের বেশি বয়সী দু’জন। ইতিমধ্যে শুনেছেন, আমাদের একজন চিকিৎসক মারা গেছেন, তার বয়স ৫০ বছর। আরেকজন ৩৫ থেকে ৪০ বছর বসয়ী মারা গেছেন। তবে ৩৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তি ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। ক্যানসারের সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। এই চারজনের মধ্যে পুরুষ তিনজন এবং নারী একজন।’
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৭৪০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২১৯ জন। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩১ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও চারজন। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে। এছাড়া আরও সাতজন সুস্থ হয়েছেন। ফলে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সেগুলো হলো- নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর, বাসাবো, নতুন করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও কেরানীগঞ্জ। সেখানে লকডাউন আরও বেশি কঠিন করতে হবে। আমরা লক্ষ্য করি, জনগণ বাইরে ঘোরাফেরা করে। বাজারে প্রয়োজন ছাড়া ঘোরাফেরা করে। আমরা সকলকে অনুরোধ করব, আপনারা বাড়িতে থাকবেন। বাইরে যত বেশি ঘোরাফেরা করবেন, এই সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। আমাদের চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া আপনারা জানেন, লকডাউন বারে বারে দেয়া সম্ভব নয়। এটা আমাদের ভেবে দেখার বিষয় আছে। আমরা যেন লকডাউন মেনে চলি, ঘরে থাকি অযথা যেন আমরা বাইরে না যাই।’
ব্রিফিংয়ে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের আইসোলেশন শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৯৭৭টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১ হাজার ৫০টি এবং ঢাকার বাইরে ৫ হাজার ৪২৭টি। এ সব হাসপাতালে আইসিইউ আছে ১৯২টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ৪০টি। সারাদেশের ৬৪ জেলার সব উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৮৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক কোয়ারেন্টাইনের সেবা প্রদান করা যাবে ২৬ হাজার ২৫২ জনকে।’
পিডি/এফআর/এমকেএইচ