১০ টাকা কেজির চাল পাবে আরও ৫০ লাখ পরিবার
যাদের নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কোনো কার্ড নেই এমন দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের তালিকা করে কার্ডের মাধ্যমে ওএমএসের ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার নির্দেশ দিয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ কর্মসূচির আওতায় করোনাভাইরাস মহামারিতে বেকার হয়ে পড়া নিম্নবিত্ত, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দিতে আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড চালু করে তাদেরকে ১০ টাকা কেজিতে ওএমএসের চাল দেবে সরকার।
আসন্ন রমজান শুরুতেই নতুন করে ৫০ লাখ পরিবারকে এ কর্মসূচির আওতয় আনা হচ্ছে। তাই এ কর্মসূচিতে নতুন করে আরও ৮৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ টাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অনুকূলে সম্প্রতি ছাড় করেছে অর্থবিভাগ। এর আগে এ কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবার সুবিধাভোগী হিসেবে রেশন সুবিধা তথা ১০ টাকা কেজিতে চাল পেয়ে আসছে সেটাও বহাল রয়েছে। অর্থবিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০ টাকা কেজির বিশেষ ওএমএসসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাত ও চুরি হওয়া চাল আটকের পর গত ১৩ এপ্রিল খাদ্য মন্ত্রণালয় এই কর্মসূচি স্থগিত করে। পাশপাশি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জেলা পর্যায়ে চলমান ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ে ৬৪ সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
তবে এ কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়নে গত ১৫ এপ্রিল খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগে থেকে যারা ভিজিডি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকাভুক্ত রয়েছেন, তাদের এ তালিকার বাইরে রেখে যাদের কার্ড নেই এমন দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের তালিকা তৈরি করে ১০ টাকা কেজি দরে মাসিক ২০ কেজি বা পাক্ষিক ১০ কেজি করে চাল করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিতরণ করতে হবে। এ কার্যক্রম প্রথম রোজা থেকেই পুনরায় চালু করতে চায় সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহাতয়তা দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে ৫০ লক্ষ নতুন রেশন কার্ডধারীদের সরবরাহের জন্য সরকার জরুরি ভিত্তিতে ২ লাখ টন চাল সংগ্রহ করবে। এজন্যই মূলত এই ৮৭৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থবিভাগ। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামালের জরুরি অনুরোধের প্রেক্ষিতে এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এখন রেশন কার্ডধারী ৫০ লাখ স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ করছে। রেশন কার্ড কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রেখেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় অতিরিক্ত আরও দুই লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে এ কর্মসূচির জন্য। জানা গেছে, রোজার প্রথম দিন থেকেই এ কর্মসূচিতে নতুন করে যুক্ত হওয়া ৫০ লাখ পরিবার এ সুবিধা ভোগ করতে পারেবন।
এদিকে গত সপ্তাহে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও পিপিআরসির প্রকাশিত এক জরিপের তথ্যমতে, করোনাভাইরাসের কারণে যে সাধারণ ছুটি চলছে এতে সাধারণ মানুষের আয় ৮০ শতাংশ কমেছে। একইভাবে চলতি মাসের শেষে দরিদ্র শ্রেণির প্রায় ৬ কোটি মানুষের খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে। এদেরকেই মূলত এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে নতুন করে ৫০ লাখ পরিবারকে রেশন কার্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এমইউএইচ/এমএফ/পিআর