সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় চার হাজার বাংলাদেশি
সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যা দেশে আক্রান্তের সংখ্যার চেয়েও বেশি। তবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে কোনো বাংলাদেশি এখন পর্যন্ত মারা যাননি।
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে এ কথা জানিয়েছেন। বুধবার (২২ এপ্রিল) তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর সরকার আক্রান্ত বাংলাদেশির সঠিক সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে আমাদের ধারণা, প্রায় চার হাজার বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগ বাংলাদেশির মধ্যে কেবল হালকা ধরনের কোভিড-১৯ এর লক্ষণ রয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরে বুধবার টানা তৃতীয় দিনের মত আক্রান্ত লোকের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, আজ আক্রান্ত এক হাজার ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জন স্থানীয়। বাকি এক হাজার একজন বিদেশি। সবমিলিয়ে দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০ এপ্রিল থেকে টানা তিন দিন এক হাজারের বেশি মানুষের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে স্থানীয় লোকের সংখ্যা খুবই কম। যেমন ২০ এপ্রিল শনাক্ত এক হাজার ৪২৬ জনের মধ্যে স্থানীয় নাগরিক মাত্র ১৬ জন। ২১ এপ্রিল শনাক্ত এক হাজার ১১১ জনের মধ্যে ২৮ জন স্থানীয় নাগরিক। আর ২২ এপ্রিল আক্রান্ত এক হাজার ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। অর্থাৎ গত তিন দিনে আক্রান্ত তিন হাজার ৫৫৩ জনের মধ্যে মাত্র ৫৯ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। বাকিরা বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও চীনের নাগরিক।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান আশার কথা শুনিয়ে বলেন, আক্রান্ত বাংলাদেশিদের কারও অবস্থাই গুরুতর নয়। এমনকি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন যে বাংলাদেশি কর্মী, তাকে প্রায় দুই মাসের বেশি সময় পর আইসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থাও বেশ ভালো।
গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং জাতির উদ্দেশে ভাষণে অভিবাসীদের প্রসঙ্গে কথা বলার সময় দুই মাসের বেশি সময় পর আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে নেয়া বাংলাদেশি কর্মীর বিষয়টি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের ওই কর্মীর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে। আশা করি তিনি খুব দ্রুত তার সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে কোলে তুলে নিতে পারবেন।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার জানান, লক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক লোকজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কারণে দেশটিতে বেশি সংখ্যক করোনাভাইরাস আক্রান্ত লোকজন চিহ্নিত হচ্ছেন।
বর্তমানে দেশটিতে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজারের মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরস্থ হাইকমিশন।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবশেষ বুলেটিন অনুসারে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তিন হাজার ৭৭২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে মারা গেছেন ১২০ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৯২ জন।
জেপি/এইচএ/এমকেএইচ