করোনার থাবায় বন্ধ দোকানপাট, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২০

ইফতারের মিনিট দশেক বাকি। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি ব্যাংকের বুথের সামনে বসে আছেন এক বৃদ্ধ নিরাপত্তারক্ষী। আশপাশের সব মার্কেটের দোকানে তালা ঝুলছে। ওই নিরাপত্তারক্ষীর আশপাশেও কেউ নেই। রাস্তাঘাট ফাঁকা। মাঝে মধ্যে দু-একটি রিকশা ও গাড়ি দ্রুতবেগে ছুটে চলেছে গন্তব্যপানে।

এগিয়ে যেতেই ওই নিরাপত্তারক্ষীর সামনে একটি কাঠের টুলে পলিথিনের প্যাকেটে সামান্য মুড়ি, তিন-চারটি খেজুর ও একটি পানির বোতল দেখা যায়। নাম তার নুরু মিয়া।

Shop-2

কেমন চলছে জানতে চাইলে নুরু মিয়া বলেন, এই রোজার মাসে এলাকার সব মার্কেট বন্ধ। মানুষও টাকা তুলতে কম আসে। সন্ধ্যার পর গোটা এলাকা অন্ধকার থাকে। একলা ডিউটি করতে ভয় করে।

নুরু মিয়া তার সামনে রাখা মুড়ি ও খেজুর দেখিয়ে বলেন, মার্কেট খোলা থাকলে ইফতারের আইটেমের শেষ থাকে না। এই দোকান সেই দোকান থেকে ইফতার দেয়। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই অনেকে বকশিশ দেয়। কিন্তু এবার ব্যবসায়ীরাও নাই, ইফতারও পাই না। কোনো রকমে নিজের টাকায় ইফতার কিনে খাই।

Shop-3

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) নিউমার্কেট, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও এলিফ্যান্ট রোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ছোট-বড় শপিংমল ও মার্কেটের প্রতিটি দোকানে তালা ঝুলছে। চারদিকে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কোনো মার্কেটে অন্য কেউ নেই।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত এক মাসেরও বেশি সময় যাবত রাজধানীর সব মার্কেট বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন দোকানপাট বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বিরাট অংকের লোকসান গুনছেন। বিশেষ করে রমজান মাস ও পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যারা বিপুল অংকের টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের মাথায় হাত।

Shop-3

আলাপকালে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় তাদের পণ্য বেশি বিক্রি হয়। বিশেষ করে রোজার মাসের প্রথম থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত দম ফেলার ফুসরত থাকে না। শবে বরাতের পর থেকেই নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক-আশাকসহ অন্যান্য সামগ্রী উৎপাদন ও আমদানিতে ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু এবার সেই ব্যস্ততা নেই। করোনা ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীকে ঘরবন্দি করে ফেলেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির আশায় বুক বেঁধে ঘরেই থাকছেন তারা।

এমইউ/এইচএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।