সচল হতে শুরু করেছে রাজধানী!
করোনাভাইরাসের ভীতি কাটিয়ে ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে আগের তুলনায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল অনেক বেড়েছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরার ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কড়াকড়ি না থাকায় অনেকেই সাহস করে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন।
তবে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার (মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস এবং শরীরে পিপিই) অভ্যাস দেখা গেছে। এখনো প্রকাশ্যে কিছু না বললেও একাধিক রোগতত্ত্ব ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরের বাইরে বের হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন।
রোববার (৩ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে লোকজনের যাতায়াত ও যানবাহন চলাচল অনেক বেড়েছে। গণপরিবহন চলাচল শুরু না হলেও রাস্তাঘাটে প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বেড়েছে। কোথাও কোথাও মৃদু যানজটও দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারেও ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কয়েকদিন আগেও রাস্তাঘাটে সুনসান নীরবতা বিরাজ করলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। রমজান উপলক্ষে রাস্তাঘাটে ভাসমান ফলমূল ও শাক-সবজি বিক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। ধীরে ধীরে পাড়া-মহল্লার দোকানপাটও খুলতে শুরু করেছে। যদিও এখনো সবার মধ্যে কাজ করছে অজানা আতঙ্ক।
আজিমপুর এলাকার মুদি দোকানদার শাহ আলী জাগো নিউজকে জানান, করোনার ভয়ে গত এক মাসেরও বেশি সময় দোকান বন্ধ রেখেছেন। এ সময় আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় জমানো টাকা খরচ করে সংসার চালিয়েছেন। মনে মনে আতঙ্ক থাকলেও আয়-রোজগারের আশায় দোকান খুলে বসেছেন এবার। তবে তিনি মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে বেচাকেনা করছেন বলে জানান।
শাজাহানপুর এলাকার ফুটপাতের কলা বিক্রেতা বৃদ্ধ নাজিম উদ্দিন জানান, গত কিছু দিন ঘরে বসা ছিলেন। কয়েকবার ফুটপাতে কলা বিক্রির চেষ্টা করলেও পুলিশ তাড়িয়ে দেয়। সংসারের খরচ চালাতে গতকাল শনিবার (২ মে) থেকে ফুটপাতে কলা বিক্রি করছেন তিনি। বেচাকেনাও মোটামুটি ভালো।
করোনাভাইরাসের ভয় আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনার ভয় পেলে বউ পোলাপানরা না খাইয়া মরবো।
এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধীরে ধীরে জনচলাচল বাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির একাধিক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, দেশের মানুষ ভয়ে কুঁকড়ে আছে। তাদের ঘরের বাইরে আনা দরকার। মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বন করে বাইরে বের হলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম। এছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হলে বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় কি-না তা বোঝা সম্ভব হবে।
এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ