১০ টাকা কেজিতে চাল দিতে ৬১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ

মেসবাহুল হক
মেসবাহুল হক মেসবাহুল হক , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ০৯ মে ২০২০

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ব। দেশেও চলছে লকডাউন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়াদের সহায়তার লক্ষ্যে মোটা অংকের ভর্তুকি দিয়ে সারাদেশে প্রতিকেজি ১০ টাকায় চাল দিচ্ছে সরকার। চলতি মাসে এ ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রির জন্য ৬১৮ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রান্তিক ৫০ লাখ পরিবারের কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রি করা হয়। এ ৫০ লাখ পরিবারকে চলতি মে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিতে এক লাখ ৫০ হাজার মেট্টিক টন চাল কেনা হবে। এ জন্য খাদ্য অধিদফতরের অনুকূলে চাল বিক্রির ভুর্তকি বাবদ ৩৯৬ কোটি ১৫ লাখা টাকা ছাড় করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া সরকার শহরাঞ্চলসহ সারাদেশে খোলা বাজারে বিক্রি কর্মসূচির (ওএমএস) চালের দাম কমিয়ে ১০ টাকা করেছে। এর আগে ওএমএসের চালের কেজি ৩০ টাকা ছিল। খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রির জন্য ৮৪ হাজার মেট্টিক টন চাল কিনবে সরকার। এ জন্য ভর্তুকি বাবদ খাদ্য অধিদফতরের অনুকূলে মে মাসে ২২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি এ চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে। এ জন্য কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। গ্রাম এলকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে এ চাল দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে কারোনার কারণে এ কর্মসূচি ছাড়াও একই সঙ্গে অনেক কর্মসূচি চলমান রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবয়নে যারা জড়িত তারা সিদ্ধান্ত নেবে কখন কোন কর্মসূচি চালাবে।’

‘কারণ খাদ্যবান্ধ কর্মসূচির পাশাপশি ত্রাণ, মানবিক সহায়তা, ভিডিজিসহ অনেকগুলো কর্মসূচি আছে। এ কর্মসূচি প্রতিটি জেলায় সমন্বয় করেন ডিসি এবং ইউএনও। আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে তাদের প্রয়োজনীয় চাল দিয়ে দেব। আর তারাই ঠিক করবেন কোন কর্মসূচি কখন চালু রাখবেন।’

খোলা বাজারে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রির বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘গত মাসে দশ কেজি করে দেয়া হয়েছে। এ মাসে কার্ড দেয়া হয়ে গেছে অধিকাংশ জায়গায়। তালিকায় হয়ে গেছে এখন ডাটাবেজের কাজ চলছে। এ কার্যক্রম শেষ হলেই মধ্য মের দিকে এ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।’

এদিকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য কয়েক দফায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এরমধ্যে শিল্প ঋণের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষ ও কৃষকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা, রফতানি উন্নয়ন ফান্ড গঠনে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, প্রি-শিপমেন্ট ঋণে পাঁচ হাজার কোটি টাকা, গরিব মানুষের নগদ সহায়তা বাবদ ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

যদিও এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের অধিকাংশই সংস্থান হবে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে। এরপরও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণে সুদ ভুর্তকি বাবদ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা এবং রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার সংস্থান বাজেট থেকে হবে। গরিব মানুষের নগদ সহায়তার ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি এবং ৬১৮ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতের জন্য অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকাসহ বেশকিছু টাকা বাজেট থেকে সংস্থান হবে।

এমইউএইচ/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।