স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালু করার দাবি
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে সীমিত আকারে সারাদেশে গণপরিবহন চালু করার দাবি জানিয়েছে ‘যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন। সোমবার ১১টি সুপারিশ তুলে ধরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
এতে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। এই ছুটি চলবে ১৬ মে পর্যন্ত। সাধারণ ছুটিতে সারাদেশ কার্যত লকডাউন অবস্থায় থাকার কথা। প্রথমদিকে সব বন্ধ রেখে কঠোরভাবেই ঘরবন্দি অবস্থা চলছিল। তবে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা অবরুদ্ধ পরিস্থিতি কয়েক দিন ধরে ভেঙে পড়েছে।
‘বিশেষ করে দিনমজুর, গৃহকর্মীসহ দৈনিক কাজের ওপর নির্ভরশীল মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছে। পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পোশাককর্মীরা আইন পরিপন্থী হলেও পণ্যবাহী গাড়িতে কর্ম এলাকায় ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। রাতের আঁধারে সাধারণ যাত্রীদের একটি অংশ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাচ্ছেন পণ্যবাহী গাড়িতে। সে কারণে সীমিত আকারে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর করা দরকার’ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুদ্দীন চৌধুরী বলেন, জীবন যেমন জরুরি তেমনি জীবিকাও দরকার। আর এ দুটোকে সমন্বয় করতে গেলে গণপরিবহন চালু করার কোনো বিকল্প নেই। জীবিকার তাগিদে একটু একটু করে সবই চালু করতে হবে। তবে তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনে ৪০ সিটের গাড়িতে ২০ সিট পরিপূর্ণ করে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী বহন করলে ও গাড়িতে ওঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা এবং প্রতি ট্রিপ শেষে জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করলে করোনার সংক্রমণ থেকে যাত্রীদের রক্ষা করা সম্ভব। একই সাথে ৭০ লাখ পরিবহন শ্রমিকও রুটি-রুজি শুরু হবে।
গণপরিবহন চলাচলে ১১ সুপারিশ-
১. বাস স্টপেজ ও রেলস্টেশনে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপার জন্য স্টেশনে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার রাখতে হবে।
২. যাত্রীদের চলাচলের স্থানগুলো পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
৩. বাস স্টপেজ ও রেলস্টেশনে হাতধোয়ার ব্যবস্থা বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থান, বাস কমপার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৫. যাত্রীদের মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহারে সচেতন করতে হবে।
৬. সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭. যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট কেনার পরামর্শ দিতে হবে। গণপরিবহনের ওঠা ও নামার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য যাত্রীদের সচেতন করতে হবে।
৮. গণপরিবহনের চালক-শ্রমিক ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিই ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৯. যাত্রীদের স্বাস্থ্যসচেতন করার জন্য পত্রিকা, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও, ভিডিও ও পোস্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করতে হবে।
১০. যুক্তিসঙ্গতভাবে পরিবহনের ধারণক্ষমতা সীমিত করে যাত্রীনিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. ফেরি বা নৌ টার্মিনাল এবং নৌযানগুলোকে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
এমএএস/বিএ/এমকেএইচ