বাড়িওয়ালার হেনস্তার শিকার হলে হটলাইনে জানান : আতিকুল
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কেউ বাড়িওয়ালার হেনস্থার শিকার হলে সিটি করপোরেশনের হটলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
বুধবার (১৩ মে) রাজধানীর গুলশানে নগর ভবনে মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণ শেষে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসিতে বসবাসরত নগরবাসী এবং সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্যে মেয়র আতিকুল বলেন, পুনরায় নির্বাচিত করে ঢাকাবাসীর সেবা করার সুযোগ দেয়ায় সবার কাছে কৃতজ্ঞ। মুজিব বর্ষকালীন সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।
তিনি বলেন, পৃথিবী আজ মহাসংকট পার করছে। পুরো বিশ্ব করোনায় বিপদগ্রস্ত। ইতিমধ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ, আমি তাদের দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করছি। সেই সঙ্গে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
মেয়র বলেন, আমি কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী। মেয়র পদে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের আগে থেকেই এ মহাদুর্যোগের সময়ে নগরবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সিটি করপোরেশনের কর্মীদের পাশে থেকে তাদের অনুপ্রেরণা যোগানোর মাধ্যমে এবং ডিএনসিসির সঙ্গে সমন্বয় করে নগরবাসীর জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, করোনার বিস্তার ঠেকাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানও এখন পর্যন্ত আশার আলো দেখাতে পারেনি। করোনা প্রতিরোধে একমাত্র উপায় হিসেবে সামাজিক দূরত্বসহ বেশকিছু নিয়ম মেনে চলার কথা বলছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের অন্যান্য বড় শহরের মত করোনা প্রতিরোধে ডিএনসিসি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মেয়র আতিক বলেন, ঢাকা শহরকে করোনামুক্ত রাখতে ১০টি ওয়াটার বাউজারের সাহায্যে তরল জীবাণুনাশক ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক, ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ, কোয়ারেন্টাইন এলাকা, হাসপাতাল, প্রতিষ্ঠানের সামনে, উন্মুক্ত স্থানে, প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে তরল জীবাণুনাশক স্প্রে অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ডিএনসিসির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, মহামারিকবলিত জরুরি সেবা যেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানো, মশক নিধন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন সিটি করপোরেশনের অসংখ্য কর্মী। সার্বক্ষণিক মাঠে থাকা এসব কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিতে তাদের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া কীভাবে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে কাজ করতে হবে সে বিষয়ে তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই মহামারির সময়ে নগরবাসীর সেবায় ডিএনসিসির যেসব কর্মী কাজ করে যাচ্ছে তাদের জন্য আমি বিনা অর্থে স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করছি। এ দুর্যোগের সময়ে যদি কোনো কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয় অথবা মারা যায় তবে তিনি স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আর্থিক সহযোগিতা পাবেন। আমার পক্ষ থেকে এটি ডিএনসিসি কর্মীদের জন্য একটি ছোট উপহার।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি ঠেকাতে নিত্যপণ্যের দোকান এবং কাঁচাবাজারে দোকান মালিক এবং ক্রেতাদের জন্য বিশেষ গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ডিএনসিসির ১৬ কাঁচাবাজার উন্মুক্তস্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে যেন আরও নিরাপদে দৈনন্দিন বাজার সম্পন্ন করতে পারেন।
আতিকুল বলেন, করোনা দুর্যোগের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের আয় শূন্যের কোঠায়। না খেতে পাওয়া মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের সহায়তায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় তিন লাক অসহায়, দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। এ ছাড়া হটলাইনে ফোন করে যে কেউ ডিএনসিসির কাছে ত্রাণ সহায়তা চাইতে পারেন।
তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে ভয় নয়, একমাত্র সচেতনতাই পারে এ মহামারিকে রুখে দিতে। তাই নগরবাসীর প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ আপনাদের জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। এ দুর্যোগের সময়ে আমি এবং ডিএনসিসি সবসময় আপনাদের পাশে রয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া ও বিভাগীয় প্রধানরা।
এইউএ/এএইচ/এমএস