এনআইবিতে করোনার জিন রহস্য নির্ণয়
স্যাঙ্গার পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স (জীবন রহস্য) নির্ণয় করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি)। দেশের তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় করলো প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহর পরিচালনায় প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তিনি বলেন, করোনা মহামারির কার্যকর মোকাবিলার অংশ হিসেবে দেশে এ সংক্রান্ত গবেষণা যেমন- ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় অত্যন্ত জরুরি। এ প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখেই করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ে কাজ করছে এনআইবি।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে বেসরকারিভাবে যে দুটি প্রতিষ্ঠান এ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করেছে। এনআইবির উন্মোচিত জিনোম সিকোয়েন্স গোল্ডেন স্ট্যান্ডার্ড ম্যাথড স্যাঙ্গার ডাইডিওক্সি পদ্ধতিতে করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে নির্ণীত জিনোম সিকোয়েন্স প্রায় শতভাগ নির্ভুল।
তিনি বলেন, ১টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করা হয়েছে এবং আরও ৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে এনআইবির সিকোয়েন্স করা জিনোম যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ইতালির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এনআইবিতে প্রাপ্ত সিকোয়েন্সে কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে এবং অধিকতর এনালাইসিসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা নির্ণয়ের সেবা প্রদানের প্রস্তুতির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম খরচে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণে পিসিআর নির্ভর কিট উদ্ভাবনে এনআইবির গবেষকদল কাজ করছেন। এ পর্যায়ে পরীক্ষাকৃত ৭টি নমুনায় আমাদের উদ্ভাবিত কিটের শতভাগ সাফল্য পাওয়া গেছে। অধিক সংখ্যক নমুনায় পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এ কিট নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. মো. সলিমুল্লাহ বলেন, এনআইবিতে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং করার যন্ত্র না থাকলেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের প্রচেষ্টা ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এবং সিনিয়র সচিব মো. আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতায় জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের এ জটিল কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ১২ মে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) দেশে প্রথমবারের মতো জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় করে। এরপর ১৭ মে আর্ন্তজাতিক জিন ডাটা ব্যাংক- জিআইএসএআইডি করোনার পাঁচটি জিনোম সিকোয়েন্স জমা দেয় বাংলাদেশের ডিএনএ সল্যুশন। এতে তাদের সহায়তা করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডিআরআইসিএম এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল। ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড তাদের অ্যাম্লিকন বেসড নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং সিস্টেমের মাধ্যমে করোনার পাঁচটি ভাইরাসের পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিং উম্মোচন করে।
এমইউএইচ/এমএসএইচ/পিআর