কাল থেকে চলবে ট্রেন : মানতে হবে ২৪ নির্দেশনা
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর রোববার (৩১ মে) থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল থেকে আট জোড়া ট্রেন ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্টেশন থেকে ঢাকায়ও আসবে। আর আগামী ৩ জুন থেকে আরও ১১ জোড়া ট্রেন চলাচল শুরু করবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
শনিবার (৩০ মে) রেলভবনের সম্মেলন কক্ষ যমুনায় (অষ্টম তলা) করোনা পরবর্তী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। একই সঙ্গে বলেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মনে রেল পরিচালনা করা হবে।
এদিকে করোনা মোকাবিলায় রেলে যাত্রী পরিবহনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কারিগরি কমিটি ২৪ টি নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-
১. স্টেশনগুলোতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম সংরক্ষণ।
২. জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন।
৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্র স্থাপন।
৪. প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
৫. রেলওয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৬. রেলকর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা।
৭. অসুস্থ অনুভবকারীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া।
৮. তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম স্টেশনগুলোর প্রবেশপথে স্থাপন করা।
৯. স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা।
১০. যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে তাদের ওই এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।
১১. ট্রেনে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি।
১২. সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখতে হবে।
১৩. জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
১৪. টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে।
১৫. যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
১৬. প্রতিটি ট্রেন যাত্রা শুরুর আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
১৭. প্রতিটি ট্রেনে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে। যেখানে উপসর্গ আছে এমন যাত্রীদের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে।
১৮. যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে।
১৯. সারিবদ্ধভাবে ওঠানামার সময়ে যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
২০. যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে এবং হাতের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে।
২১. প্রত্যেক যাত্রী এবং রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হাঁচি দেয়ার সময় মুখ ও নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে নিতে হবে।
২২. পোস্টার ও ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে।
২৩. মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা ট্রেনে টিকিটের মাধ্যমে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
২৪. যদি করোনা রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত ২৫ মার্চ থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এমইউএইচ/এমএফ/এমকেএইচ