বিআইটিআইডিতে নমুনার পাহাড়, চবি ল্যাবে হাহাকার!

আবু আজাদ
আবু আজাদ আবু আজাদ , নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ১৪ জুন ২০২০

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা দেয়ার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা প্রতিদিনের। নমুনা দেয়ার পর ফল পেতে লেগে যাচ্ছে সাত থেকে ১০ দিন। ইতোমধ্যেই নমুনাজট কমাতে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) থেকে তিন হাজার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে করোনা পরীক্ষা নিয়ে এই যখন অবস্থা তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে গতকাল নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ২৯টি!

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চবি ল্যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের তিন উপজেলা থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। মূলত নমুনা কম সংগ্রহ কম হওয়ায় পরীক্ষাও কম হচ্ছে। অথচ ওই ল্যাবে ব্যবহৃত একটি পিসিআর মেশিনেই প্রতিদিন ১৫০ নমুনা পরীক্ষা সম্ভব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সক্ষমতার চেয়ে বেশি নমুনা সংগৃহীত হওয়ায় চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) তিন হাজারেরও অধিক নমুনার জট সৃষ্টি হয়। জটের কারণে সংশ্লিষ্ট ল্যাবগুলো পাঁচ থেকে ছয়দিন আগের সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা চলছে।

বিআইটিআইডির ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমদ জাগো নিউজকে জানান, নমুনা জটের কারণে গতকাল শনিবারও তারা গত ৯ জুনের ২২৫টি নমুনা পরীক্ষা করেছেন।

এদিকে রাঙামাটির সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা জাগো নিউজকে জানান, গতকালের আগে টানা চারদিন তারা করোনার নমুনা পাঠালেও রিপোর্ট পাননি। চট্টগ্রামের ল্যাবে নমুনা জটের কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আল ফোরকান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার ৫৮টি ও শনিবার ২৯টি নমুনা পরীক্ষা করেছি। মূলত তিন উপজেলা হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাউজান থেকে সংগ্রহ করা নমুনাগুলো আমরা পরীক্ষা করছি।’

নিজেদের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক আল ফোরকান বলেন, ‘আমরা তো মোটামুটি ৫০০ নমুনা পরীক্ষার টার্গেট নিয়েছি। এখন একটি মেশিনে ১৫০ নমুনা পরীক্ষা সম্ভব। আর বিআইটিআইডিকে দেয়া পিসিআর মেশিনটি ফেরত এলে পরীক্ষা আরও বাড়ানো যাবে।’

এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানো হলে চট্টগ্রামে নমুনাজটের কিছুটা হলেও সুরাহা হবে।

চট্টগ্রামে সিভিল সার্জনকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জাগো নিউজকে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোস্তফা খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আমলে নিচ্ছি। অতি শিগগিরই আমরা চবি ল্যাবের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে সেখানে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ছাড়াও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এবং পাশের জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ মার্চ বিআইটিআইডি ল্যাবে চট্টগ্রামের প্রথম করোনা পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ৯ মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ১২ জুন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চালু করা হয়। তবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজেও দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলার নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।