ক্ষণে ক্ষণে আলোকিত রাজপথ, পরক্ষণেই গা ছমছমে পরিবেশ
রোববার (১৪ জুন) রাত সোয়া ৮টা। দূর থেকে ভেসে আসছে এশার নামাজের আজান। রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে ওভার ব্রিজের উপর থেকে উত্তর-দক্ষিণমুখী দুপাশে যতদূর চোখ যায় রাস্তাজুড়ে শুধুই আলো।
দুপাশের রাস্তাতেই দ্রুত বেগে ছুটে যাচ্ছে বড় বড় মালবাহী ট্রাক, প্রাইভেট কার, বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি ও প্যাডেলচালিত রিকশা। এসব যানবাহনের আলোতে রাজপথ আলোকিত। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে কে কার আগে যাবে সেই অঘোষিত প্রতিযোগিতা চলছে যেন।
কিন্তু যানবাহনগুলো চলে যাওয়ার পরেই রাজপথজুড়ে গা ছমছমে পরিবেশ। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয় থাকলেও জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে দিনের বেলা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি অনেক বেশি থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই রাস্তায় মানুষের সংখ্যা কমতে থাকে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এখন আর মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। যারাই বিশেষ প্রয়োজনে বের হচ্ছে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরিধান করে বের হচ্ছে।
রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, হাতিরপুল, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখা দেছে, অন্যান্য সময় রাত ৮টায় ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে অসংখ্য যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি থাকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সবকিছু বদলে দিয়েছে। অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা। ভবঘুরে ও ভাসমান মানুষ ছাড়া কিছু সংখ্যক মানুষকে ফাঁকা রাস্তায় হাঁটতে বের হতে দেখা যায়। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী পরিহিত অবস্থায় একজন পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লান্ত দেহে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নিউমার্কেট থানার সামনে।
কাঁটাবন মোড়ে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সামনে নিরাপত্তারক্ষীকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। লোকজন আসে কিনা জিজ্ঞাসা করতে তিনি হেসে বলেন, এই করোনাকালে ক্রেতা কোথা থেকে আসবে? তবুও মালিকের নির্দেশে সম্প্রতি রেস্টুরেন্ট খুলেছেন বলে জানান তিনি।
রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি না থাকলেও বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। জনমানবশূন্য ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির হেডলাইটের আলোতে ক্ষণে ক্ষণে চারপাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। আবার কিছুক্ষণ পর একই রাস্তা সুনসান নীরবতায় ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি করে।
এমইউ/এমএসএইচ