করোনাকালে অন্যরকম ঈদ কাল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২০
ফাইল ছবি

অডিও শুনুন

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং বন্যার মধ্যেই আগামীকাল (শনিবার) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম এ উৎসব পালনে নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেশবাসী। শেষ বেলায় কোরবানির পশুর বাজারে ভিড় বেড়েছে। তবে বেচাবিক্রি অন্য বছরগুলোর তুলনায় কম। আর আনন্দ-উৎসবের একান্ত অনুসঙ্গ পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড়বাট্টা নেই।

প্রতিবছর হিজরি সনের ১০ জিলহজ মুসলমানদের জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত অনুসারে পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারের ঈদ ও কোরবানি সম্পন্ন করতে ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।

গত ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদেও করোনাভাইরাস সারাবিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। এবার ইতিহাসের সবচেয়ে কম সংখ্যক হজযাত্রী মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বুধবার পবিত্র কাবা তওয়াফের মাধ্যমে হজ পালন শুরু করেছেন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে সৌদি আরব এ বছর এই সীমিত আকারে হজ কার্যক্রমের আয়োজন করে। সেখানে যেতে পারেননি বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম বিশ্বের মানুষ।

কারোনার কারণে উন্মুক্ত স্থানে ঈদের জামাত আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই ঈদগাহ মাঠ সরগরম হচ্ছে না। ফলে রাজধানীসহ সারাদেশের মসজিদগুলোতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ঈদের নামাজ পড়তে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে নামাজ শেষে কোলাকুলিও হচ্ছে না। আর হাত মেলানোর অভ্যাস তো এখন ভুলতেই বসেছেন সবাই।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই দেখা দিয়েছে বন্যা ও নদীভাঙন। দেশের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। বন্যাকবলিত উপজেলার সংখ্যা ১৫০টি এবং ইউনিয়নের সংখ্যা ৯৩৬টি। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ১০ লাখ ৪০ হাজার ২৬৬টি এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৩ জন। এর মধ্যেই ঈদ আনন্দ পালনে ব্যস্ত হয়ে দেশবাসী। কোরবানির পশু কিনতে ছুটছেন হাটে। বড়রা তেমন কেনাকাটা না করলেও সন্তানদের জন্য নতুন পোশাক কিনছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে স্বাভাবিক সময়ের ঈদযাত্রার মতোই হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর সদরঘাটে ভিড় করে। তবে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছিল জনশূন্য। মূলত কম ট্রেন চলাচলের কারণেই এমনটি হয়েছে। আর বাস টার্মিনালগুলোতে মোটামুটি ভিড় রয়েছে। যদিও যানজটের কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে।

আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে হাজার হাজার মানুষ গাজীপুর ছেড়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গাজীপুরের প্রায় সব পোশাক কারখানায় ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা স্রোতের মতো বাসস্ট্যান্ডে ছুটে যান। হঠাৎ সড়কে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন সংকটে পড়েন সবাই। পরে তারা পিকআপ ও ট্রাকে চড়ে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। তবে যারা যেতে পারেননি তারা ডিজিটাল যুগের সুবিধা নিয়ে সারাক্ষণ আপনজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

এইচএস/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।