করোনা : বিজয়ের দিনে অচেনা ঢাবি এলাকা
করোনা মহামারির কারণে এবার সীমিত পরিসরে পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। অন্যান্য বছরের তুলনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, স্বাধীনতা জাদুঘরে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে এসব এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
ফাঁকা রাস্তাগুলোতে সাইকেলপ্রেমীদের আনাগোনা দেখা গেছে। এছাড়া অনেককে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালাতেও দেখা গেছে।
সোহরাওয়ার্দীর শিখা চিরন্তনে দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন সাইকেলপ্রেমী নাবিল। এমআইএসটির এই ছাত্র বলেন, ‘ফাকা রাস্তা পেয়ে চলে এলাম। আমি ধানমন্ডি থাকি, অন্য সময়ে রাস্তায় অনেক ভিড় থাকে।’
শিখা চিরন্তনের নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য নাজমুল বলেন, ‘প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর এখানে প্রচুর লোকের সমাগম হলেও এবার মানুষ অনেক কম। স্বাধীনতা জাদুঘর, শিখা চিরন্তনে সকাল ৯টার মধ্যে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়, কিন্তু এই বছর মানুষের উপস্থিতি অনেক কম।’
যেকোনো উৎসবে হাজারো মানুষে মুখরিত থাকে রাজু ভাস্কর্য, টিএসসি, ডাস চত্বর, মল চত্বর, হাকিম চত্বর, মিলন চত্বর, ভিসি চত্বর, দোয়েল চত্বর ও সমাজবিজ্ঞান চত্বরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের বিভিন্ন এলাকা। তবে এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ, আবার কোনো অনুষ্ঠান সকালে নেই। অন্যান্য বছর টিএসসি, রাজু ভাস্কর্যের সামনে কনসার্টসহ অনেক আয়োজন থাকে। এবার অনুষ্ঠান কম, বিকালে একটা কনসার্ট হবে, তখন মানুষের উপস্থিতি বাড়বে।’
টিএসসির চায়ের দোকানদার রুবেল বলেন, ‘ধরেই নিয়েছিলাম এবার লোক হবে না। করোনা আছে আবার নিষেধাজ্ঞা আছে, এসব কারণে মানুষ নাই।’
টিএসসির সামনে চুড়ি বিক্রি করছিলেন শরীফা। তিনি বলেন, ‘১৬ বছর ধরে চুড়ি বিক্রি করি এইখানে। এ বছর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ। সকালে আসছি, এমন সময় মানুষে গিজ গিজ করতো। আর আজকে এখনও কিছুই বিক্রি করতে পারিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রাজু বলেন, ‘মানুষের উপস্থিতি কম এটা এক হিসেবে ভালো, কেননা করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। ছুটির দিনে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে এসেছি।’
এদিকে জাতীয় জাদুঘরে ছিল ভিন্ন চিত্র। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে শুরু করে জাদুঘরের সামনে। তবে অনলাইনে টিকেট কাটার ব্যবস্থা থাকায় বিপাকে পড়েছেন অনেক দর্শনার্থী।
মাদারীপুর থেকে দুই ভাগ্নেকে নিয়ে জাদুঘর দেখতে এসেছেন শিপন আহমেদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘এখন বিকাশ কই পাই। বাচ্চাগুলাকে কোথায় রাখবো। এই অবস্থা কেন করলো, আমরা তো জানি না। কী একটা বিপদে পড়লাম।’
এসএম/ইএ/এমকেএইচ