শীতে করোনা কমা নিয়ে ড. বিজনের পূর্বাভাস ফলেছে
শীতের আবহাওয়া করোনা সংক্রমণের জন্য উপযোগী। তাই শীতকালে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা ছিল আগে থেকেই। সেই শঙ্কা বিশ্বের অনেক দেশেই বাস্তবে রূপ নিয়েছে। অনেক দেশেই শীতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যাপক হারে বেড়েছে সংক্রমণ। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়েনি। এমনকি ইউরোপ-আমেরিকায় আক্রান্তের হার যখন চূড়ায়, তখন বাংলাদেশে দিনে সংক্রমণ হাজারের নিচে নামছে।
‘বাংলাদেশে শীতকালে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হবে না’-এই পূর্বাভাস জুলাই মাসেই দিয়েছিলেন সার্স ভাইরাস শনাক্ত করার কিট ও করোনাভাইরাস শনাক্তের ‘জি র্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল। সে সময় এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা ছিল, ‘বাংলাদেশে লকডাউন ভালোভাবে কার্যকর না হওয়ায় প্রচুর মানুষের মধ্যে এন্টিবডি এসেছে। শীত আসতে আসতে আরও অনেক মানুষের মধ্যে এন্টিবডি চলে আসবে। ফলে করোনাভাইরাস বৃদ্ধি পাওয়ার জায়গা পাবে না।’
ড. বিজন কুমার করোনা সংক্রমণের মধ্যে ৬ জুলাই জাগো নিউজের এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘শীতের আগেই করোনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। মানে ওইরকম করোনা সংক্রমণ হবে না।’
বাংলাদেশে শীতে করোনা সংক্রমণ কম হওয়ার কথা জাগো নিউজকে এর পরেও বলেছেন।
৩০ সেপ্টেম্বর জাগো নিউজের সঙ্গে আরেকটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে ড. বিজন কুমার বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশে সাধারণত ডিসেম্বরের আগে শীত খুব একটা হয় না, নভেম্বরে খুব একটা শীত পড়ে না। অবশ্য ইদানিং কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। মাঝখানে দুই মাস সময়। এই সময়ে আমাদের দেশে বিশাল একটা জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি বা এন্টিবডি ডেভেলপ করবে। যে এন্টিবডিকে ক্রস করে ভাইরাস খুব একটা স্প্রেড করতে পারবে না। বাতাসে, পানিতে ভাইরাসের পরিমাণ কমে আসবে। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে।’
শনিবার (২ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার জাগো নিউজকে বলেন, ‘জুলাইয়ে আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশে শীতকালে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাবে। এতদিন পর তার ফলাফল দেখা যাচ্ছে। সারা পৃথিবীতে করোনা বাড়ছে, কিন্তু আমাদের কমে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় আমি বলেছিলাম, হার্ড ইমিউনিটি বেড়ে যাবে। সেটা বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ কমার মূল কারণ হার্ড ইমিউনিটি। পশ্চিমা দেশগুলোতে হার্ড ইমিউনিটি কম ছিল বলেই বাড়ার সুযোগ পেয়েছে ভাইরাসটি। আমাদের দেশে হার্ড ইমিউনিটি ক্রমাগত বেড়েছে। সেজন্য আক্রান্ত কমে এসেছে। তারা প্রথম দিকে প্রচুর লকডাউন দিয়েছিল। তারপর জুনের দিকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছিল ইউরোপে। সেটা আস্তে আস্তে এখন সর্বোচ্চ লেভেলে চলে গেছে। ইউরোপে এখন ম্যাসাকার অবস্থা।’
পিডি/এমএইচআর/এমকেএইচ