‌‘ভ্যাকসিনে শতভাগ নিরাপত্তা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪৪ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনে শতভাগ নিরাপত্তা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান।

তিনি বলেছেন, ‘নাপার ওষুধের জন্যও ২০টি সাইড ইফেক্ট রয়েছে। সাইড ইফেক্ট ছাড়া ভ্যাকসিন কোনোভাবেই সম্ভব না, এটা কমপ্লিটলি অসম্ভব। অত্যন্ত স্বল্প সময়ে ভ্যাকসিনটি আনা হয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা কোনভাবেই দেয়া সম্ভব নয়, অন্তত এই মুহূর্তে। তারপরও প্রত্যেকের নিজেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার ক্ষমতা আছে। আমরা চেষ্টা করবো মানুষকে আশ্বস্ত করার। তবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে প্রথমে আমরা কিছু ভলান্টিয়ারকে ভ্যাকসিন দিতে পারি, সেটি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তালিকার বাইরেও ভলান্টিয়ারদের দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি আমরা, এ ব্যাপারে হয়তো খুব তাড়াতাড়ি জানা যাবে।’

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গু বিষয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘যারা করোনা আক্রান্ত থাকবেন তারা ভ্যাকসিন পাবেন না। সুস্থ হওয়ার চার মাসের মধ্যে তাকে আমরা ভ্যাকসিন দেব না। কারণ অলরেডি তার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনের একটা রিস্ক অবশ্যই থাকবে। ফাইজারের ভ্যাকসিন কিন্তু রিঅ্যাকশনলেস ছিল না, এই ভ্যাকসিনেও রিঅ্যাকশন হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে এই রিস্ক নিয়েই ভ্যাকসিন প্রয়োগ হচ্ছে। কিছু ঝুঁকি নিতেই হয়।’

ভ্যাকসিন উপজেলা পর্যায়ে কিভাবে যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন পাঠানোর যে পদ্ধতি আগে থেকে চলে আসছে সেই পদ্ধতিটাই আমরা মেইনটেইন করবো। ভ্যাকসিন যে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে তারা আমাদের জেলা পর্যন্ত ভ্যাকসিনটা পৌঁছে দেবে। আমাদের সরকারি দায়িত্ব, জেলা থেকে উপজেলা এবং উপজেলা থেকে ভ্যাকসিন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। এটার জন্য পর্যাপ্ত ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম দীর্ঘদিন যাবত চালু আছে, জেলা থেকে উপজেলায় ভ্যাকসিন চলে যাবে; উপজেলা থেকে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার বক্সে যেদিন যে কেন্দ্রে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

করোনা ভ্যাকসিন প্রথম ধাপে ফ্রন্টলাইনারদের দেয়া হবে, ফলে সবার আগে চিকিৎসকরা এটি পাবে; কিন্তু তারা এই ভ্যাকসিনে আস্থা রাখতে পারছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিনে আস্থার চেয়ে সঙ্কট বেশি এটা আমিও শিকার করি। আস্থার সঙ্কট এই মূহুর্তে একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কারণ এতো কম সময়ে গবেষণা করে ভ্যাকসিন পৃথিবীতে কখনই আনা হয়নি। আমরা যখন একটা ভ্যাকসিন আনি, দুই-তিন বছর গবেষণা করে জনগণের ওপর প্রয়োগ করে তার প্রতিক্রিয়া দেখে আনা হয়। কিন্তু এটা একটা বৈশ্বিক চাহিদার কারণে সব কোম্পানি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাকসিন এনেছে। সাধারণত ডাব্লিউএইচও এতো স্বল্প সময়ে কখনই ভ্যাকসিনের অনুমতি দেয় না।’

তিনি বলেন, ‌‌‌‘এখানে বৈশ্বিক ক্রাইসিস, তাই নিয়মের বাইরেও অনেক সিদ্ধান্ত হয়তো তারা নিয়েছে। এখন আস্থার অভাবে সৌদি বাদশা নিজে ভ্যাকসিন নিয়ে সবাইকে দেখিয়েছেন, রানী এলিজাবেথও নিয়েছেন। আস্থার অভাব কাটিয়ে উঠতেই তারা সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন এবং এই আস্থার অভাব আমাদের দেশেও রয়েছে। নতুন জিনিসে আস্থার অভাব থাকেই, আমি আশা করবো এখানে আস্থার অভাব থাকবে না। কারণ যারা অনুমতি দিয়েছে অত্যন্ত গবেষণা করে অনুমতি দিয়েছে।’

‘ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড আগে ভ্যাকসিন দিয়েছে, আমরা পরে নিচ্ছি। এই পরে নেয়ার একটা বেনিফিট আছে, তারা ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে কিনা সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা যে ভ্যাকসিন নেব, সেটা অলরেডি ভারতে দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা যেহেতু প্রতিবেশী দেশ কোনো সমস্যা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে আমরা কিন্তু বুঝতে পারবো।’

আইএইচআর/এআরএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।