লঞ্চ না পেয়ে ফের বাসায় ফিরছেন ঘরমুখো যাত্রীরা
লঞ্চ না পেয়ে নিজ নিজ বাসায় ফিরে যাচ্ছেন অসংখ্য যাত্রী। লঞ্চের উপচে পড়া ভিড়ে জায়গা না পেয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে আবারও রাজধানীতে ফিরছেন তারা। এখনও লঞ্চের আশায় সদরঘাটে বসে আছেন কয়েকশ যাত্রী।
ফিরতে থাকা বরিশালগামী এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চার ঘণ্টা জ্যাম ঠেলে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে সদরঘাট এসেছি বাড়ি যাওয়ার জন্য। এসে অনেক চেষ্টা করেও কোনো লঞ্চে উঠতে পারিনি। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়েই আবার বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে।’
আব্দুল বরকত ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে ছুটে এসেছেন বরিশালের উদ্দেশে লঞ্চঘাটে। এসে দুই ঘণ্টা যাবৎ চেষ্টা করেও লঞ্চের কেবিন, সিট কিংবা ডেকে কোথাও জায়গা পাননি তিনি। কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের। আগের লকডাউনে ঢাকা আটকেছিলাম। স্ত্রী সন্তান নিয়ে আমি বাসায় ফিরে যাচ্ছি। আমাদের কষ্ট কে বুঝবে? বৃষ্টিতে ভিজে গেছি পুরো। এখন কি করব বুঝতে পারছি না।
রাজিয়া সুলতানা নামে এক নারী কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমি তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্ট করে সদরঘাটে এসেছিলাম। পথের মাঝে ঝড়-বৃষ্টি সব বাধা পেরিয়ে এসেছি। এসে দেখি লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ। পরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকলেও লঞ্চে উঠতে পারিনি। এখন আবার কষ্ট করে কুড়িল বিশ্বরোডে ফিরে যাচ্ছি।’
গতকাল সারাদেশে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এর মধ্যে আজ সন্ধ্যা ৭টায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলগামী সব ধরনের নৌযান বন্ধের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক এহতেশামুল হক পারভেজ বলেন, আমরা তো আমাদের ডিউটি শেষে বাসায় চলে আসছি। হঠাৎ লঞ্চ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তে এমন অবস্থা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের উপস্থিত ট্রাফিক বিভাগের লোকজন ভালো বলতে পারবেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সারাদেশে সাতদিনের লকডাউন ঘোষণার পর থেকে লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীরা ভিড় করতে শুরু করেন।
রায়হান আহমেদ/এআরএ