দিনে অবাধ্য হলেও রাতে ঠিকই বিধিনিষেধ মানছে নগরবাসী!
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে চলছে সরকারঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর বিধি-নিষেধ। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ছিল ঘোষিত বিধি-নিষেধের পঞ্চম দিন। তবে নামে কঠোর বিধি-নিষেধ হলেও রাজধানীর চিত্র ভিন্ন। গণপরিবহন চলছে, খুলে দেয়া হয়েছে শপিংমল ও মার্কেটও। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ।
রোগতত্ত্ব ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বের হলেও বাধ্যতামূলক মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বললেও তাতে ভ্রুক্ষেপই নেই মানুষের। ফলে রাজধানীতে নামকাওয়াস্তে চলছে কঠোর বিধি-নিষেধ।
তবে দিনের বেলায় বিধি-নিষেধ মানার বালাই চোখে না পড়লেও সন্ধ্যা নামার পরই তা মেনে চলছেন অনেকেই। ফলে রাত নামলেই রাজধানীর চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যেই রাজধানীর সড়ক, অলি-গলিতে নেমে আসছে সুনসান নীরবতা। জনসাধারণের যাতায়াত একেবারে কম চোখে পড়ছে।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) রাতে সরেজমিন রাজধানীর ধানমন্ডি, লালবাগ, কলাবাগান, রমনা ও তেজগাঁও থানা এলাকায় দেখা গেছে, রাস্তাঘাটে সুনসান নীরবতা। ফাঁকা রাস্তায় ছুটছে পণবাহী ট্রাক। মোড়ে মোড়ে রিকশাচালক ও রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল মালিকরা যাত্রীর অপেক্ষা করলেও দেখা নেই।
যারা যাত্রী পাচ্ছেন তারা ফাঁকা রাস্তায় স্বল্প সময়েই গন্তেব্যে পৌঁছে যাচ্ছেন বলে জানালেন। বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমি ফল বিক্রেতাদের তরমুজ নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেলেও ক্রেতা নেই। সারাদিনে বিক্রি না হওয়া সবজি ও মাছ নিয়েও অনেক বিক্রেতা মূল সড়কের পাশে বসে আছেন। তবে ক্রেতাদের দেখা নেই।
নীলক্ষেত মোড়ে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম নামে এক যুবক। যাকেই পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখছেন, তাকেই জিজ্ঞাসা করছেন কোথায় যাবেন? অনেক সময় পর উত্তরার একজন যাত্রী পেয়ে মুখে হাসি ফুটে তার।
সিরাজুল জানান, কঠোর বিধি-নিষেধ চলায় তার মতো আরও অনেকে থাকায় যাত্রী খুব কম পান। কিন্তু রাতের বেলায় ভালোই যাত্রী পাওয়া যায়। ভাড়াও মেলে বেশি।
এলিফ্যান্ট রোড বাটা সিগন্যালের কাছে তরমুজ বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানান, গরমে তরমুজ বেশিদিন রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতার অপেক্ষা করেন। বিধি-নিষেধের রাতে ব্যক্তিগত গাড়িয়ে নিয়ে বের হয়ে অনেকে তরমুজ কেনেন।
এদিকে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে আজ শুক্রবার আবারও নতুন ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এবার আর বিধি-নিষেধ নয়, সর্বাত্মক লকডাউনের পথে হাঁটছে সরকার। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এ লকডাউন কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে সংক্রমণ ঠেকাতে ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের পরামর্শ দেয়।
এমইউ/এএএইচ/জেআইএম