স্বাস্থ্যবিধিতে কঠোর দোকানিরা, ক্রেতাদের ঢিলেমি
করোনাভাইরাস মহামারিতে কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খুলেছে শপিংমল-দোকানপাট। তবে মার্কেটগুলোতে দোকানিরা স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর থাকলেও কিছুটা ঢিলেমি দেখা গেছে ক্রেতাদের মধ্যে।
শনিবার (১০ এপ্রিল) শপিংমল ও দোকানপাট খোলার দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ি ও টিকাটুলি এলাকা ঘুরে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে।
দোকানিরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে থাকলেও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দোকান খোলার অনুমতি মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তারা। এক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোতে যেন ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের আস্থা বাড়ে সেদিকেও নজর দিচ্ছেন তারা।
যাত্রাবাড়ি মার্কেটের পোশাক ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা করোনার কারণে খুবই লোকশানের মধ্যে আছি। সরকার লকডাউনের মধ্যেও আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। আমরা সরকারের আস্থার প্রতি সম্মান দেখাতে চাই। ক্রেতাদের অনেকে মাস্ক না পরলে তাদের মাস্ক পরতে অনুরোধ করছি। তবে অনেক ক্রেতাই এখনও সচেতন নন। তাদের সচেতন করার চেষ্টাও করছি আমরা।’
রাজধানী সুপার মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, ‘সামনে রোজা, আমাদের ব্যবসার প্রকৃত সময়। এমন সময়ে মার্কেট বন্ধ থাকলে সমস্যায় পড়ে যাবো। এমনিতেই গত বছরের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল থেকে মার্কেট খুলেছি। আমরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিক্রি করছি। ক্রেতারাও আমাদের সযোগিতা করছেন।’
শনির আখড়া মার্কেটে পোশাক ক্রয় করতে আসা গৃহিণী শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় কিছু পোশাক কিনতে মার্কেটে আসলাম। আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। কারণ করোনার ভয় তো আমাদেরও আছে। বাসায় যেহেতু বাচ্চা আছে, পরিবার আছে, সতর্ক থেকেই চলাফেরা করতে হয় আমাদের।’
আরেক ক্রেতা জুলফিকার মুন্সী বলেন, ‘মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া বোকামি ছাড়া কিছু না। তবুও কিছু মানুষকে দেখলাম মাস্ক না পরেই মার্কেটে ঘুরছেন। তাদের জন্য আমরাও ঝুঁকিতে পড়ছি। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতার বিকল্প নেই। তবে বিক্রেতারা অনেকটাই সচেতন। তাদেরও তো করোনা ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় আছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশে ৯০ ভাগ মানুষ এখন মাস্ক পরছেন, পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এতো সংখ্যক মানুষ মাস্ক পরেন না। আর মাস্ক পরে দোকানে প্রবেশ করা ক্রেতার সংখ্যা শতভাগ। দোকানিরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে দোকানিরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।’
এর আগে বিধি-নিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শপিংমল-দোকানপাট খুলে দেয় সরকার। সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল ও দোকানপাট খোলা রাখে যাবে।
তবে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য আরও কঠোর লকডাউন দেয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আইএইচআর/ইএ/এমএস