কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনেও গলিতে ভিড়, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিনেও অলিগলি ও কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় রয়েছে। এতে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকছে না, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। অনেকে মাস্ক পরছেন না। আবার কেউ কেউ পরলেও যথাযথভাবে পরছেন না। সেই সঙ্গে গলিতে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা তো নেই-ই। এসব গলিতে পুলিশের উপস্থিতিও দেখা যায়নি।
রোববার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বর এলাকার বিভিন্ন গলি ও বড়বাগ কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মিরপুর ২ নম্বরের বড়বাগ কাঁচাবাজার থেকে দক্ষিণ মনিপুরে বিভিন্ন গলি ঘুরে দেখা যায়, গলির কিছু কিছু দোকান বন্ধ থাকলেও অধিকাংশই খোলা। তাছাড়া গলির রাস্তাগুলোর দু-ধারে ভ্যানে বসেছে সবজির দোকান। এসব দোকানে নানাজাতের খেজুর রয়েছে। পাওয়া যাচ্ছে প্রায় সবধরনের মসলা। পেয়ারা, আনারস, কমলা, আপেল, আঙুরসহ মৌসুমি সবধরনের ফলমূলও মিলছে।
মিলছে শসা, চিচিঙ্গা, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, কলা, লেবুসহ সবধরনের সবজি। ভ্যানে করে বিক্রি হচ্ছে ডিমও। মাছ-মাংসও মিলছে এসব অলিগলিতে। কলমিশাক, লাউশাক, পাটশাক থেকে শুরু করে সবধরনের শাকও মিলছে গলির ভ্যানগুলোতে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অধিকাংশই পাওয়া যাচ্ছে গলির ভ্যানে ও অন্যান্য দোকানে। স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভিড় বাড়ছে গলিগুলোয়।
মধ্য মনিপুরে সুমন নামের এক সবজি ক্রেতা জানান, তার বাসা পাশেই। কিছু সবজির প্রয়োজন ছিল। বাসার নিচেই ভ্যানে সবজির দোকান। তাই কোনো রকমের মুভমেন্ট পাস ছাড়াই সবজি কিনতে বেরিয়েছেন তিনি। আর গলিগুলোয় পুলিশের নজরদারি তুলনামূলক কম থাকায় মুভমেন্ট পাসও অতটা প্রয়োজন হয় না।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কঠোর লকডাউন শুরুর প্রথম দিনও এসব গলিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল। দিনের বেলায়ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষ গলিতে এসেছেন। গলির কোথাও কোথাও দোকানপাট রাত ৯ থেকে ১০টা পর্যন্ত খোলা ছিল। সার্বিকভাবে দিন ও রাত মিলিয়ে তুলনামূলকভাবে মানুষের ভিড় কম ছিল। তারপর থেকে দিন যত যাচ্ছে, গলিতে দোকানপাট খোলা রাখা ও মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে।
বড়বাগ কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সরকারের নির্দেশনা মতো মাছের বাজার বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু মানুষের বাড়তি উপস্থিতি থাকায় তাতেও শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। সেই সঙ্গে অনেক দোকানিকেও মাস্ক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার প্রথমে যখন লকডাউন শুরু হয়, তখন বড়বাগ বাজারে মাছের দোকান ভেতরে ছিল। ফলে অল্প জায়গাতে মাছ কেনার জন্য বহু মানুষের ভিড় লেগে থাকতো। এর দুইদিন পরই সরকারের নির্দেশনা মতো মাছের দোকানগুলো বাজার কর্তৃপক্ষ রাস্তায় নামিয়ে নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে বাজারের দুই পাশে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেয়া হয়। তাতে যেখানে প্রবেশপথ রাখা হয়েছে, সেখানে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রবেশপথেই মাস্ক পরিধানের বিষয়টি নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বাজারে মানুষের উপস্থিতি বেশি থাকায় এবং দোকানিসহ ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা কম থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই গেছে।
পিডি/এমআরআর/জিকেএস