কোথাও কঠোর, কোথাও ঢিলেঢালা লকডাউন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে সরকারঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউন’। তবে চলমান এ লকডাউনে বিধিনিষেধ আরোপে কোথাও দেখা গেছে কঠোরতা, আবার কোথাও ঢিলেঢালা। রাজধানীর কোনো কোনো সড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপও দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দেখা গেছে, লকডাউনে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রয়োজনের তাগিদে বের হওয়া মানুষ সিএনজি ও রিকশায় যাতায়াত করছেন। কোথাও কোথাও পুলিশের চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। আবার কোথাও স্বাভাবিকভাবেই যাতায়াত করা যাচ্ছে। যাত্রাবাড়ীর মূল সড়কে যানজট দেখা গেছে। পুরো সড়কজুড়েই রিকশা আর সিএনজির আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে। আর সড়কে মানুষের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট জাগো নিউজকে বলেন, ‘লকডাউনে রাস্তায় চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও অনেকে বিনা প্রয়োজনেও রাস্তায় বের হচ্ছেন। আমরা এমন ক্ষেত্রে জরিমানা করছি। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। তবে জরুরি সেবায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা অবাধে চলাচল করতে পারছেন।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. আলামিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাসা মাতুয়াইল, যাবো গুলিস্তানে। বাড়তি টাকা দিয়ে অনেক কষ্টে যাত্রাবাড়ী এসেছি। এখন এখান থেকে কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। আর রিকশার ভাড়া অনেক বেশি হওয়ায় এখনও দাঁড়িয়ে আছি।’
শনির আখড়ায় কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা সুজন মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের শুরু থেকেই অফিস করতে হচ্ছে। যেহেতু ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে তাই আমাদের অফিসে যাতায়াত করতে হয়। আমার অফিস যেহেতু মতিঝিল তাই নিজস্বভাবেই যেতে হচ্ছে। তবে রাস্তায় যানবাহন না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাড়তি ভাড়া দিয়েই রিকশা করে অফিসে যেতে হচ্ছে।’
এদিকে, বিভিন্ন সড়কে আবার রিকশা উল্টে রাখতে দেখা গেছে। কেন রিক্সা উল্টে রাখা হচ্ছে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কথা হয় রিকশাচালক হারুন চৌকিদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় যাত্রী ছাড়া রিকশা পাইলেই দুই ঘন্টা রিক্সা উল্টা করে রাখে। তবে যাত্রী থাকলে রিকশা তেমন আটকায় না। গতকালকে আমার রিকশাও উল্টাইছিলো, তাই আমি যাত্রী ছাড়া বড় রাস্তায় উঠি না।’
আরও এক রিকশাচালক মেহেদি বলেন, ‘খালি রিকশা নিয়ে রাস্তায় উঠলেই পুলিশ উল্টে রাখে। সকালেও আমার রিকশা উল্টে রাখছিলো আধাঘণ্টা। পরে আমি ছাড়া পেয়ে এদিকে আসলাম। আমরা তো গরীব মানুষ। রাস্তায় বের হতেই হবে।’
এছাড়াও সড়কে চলা সিএনজিগুলো কাছাকাছি গন্তব্যে চলাচল করছে। এক্ষেত্রে এক সিএনজিতে চারজন বা পাঁচজন করে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। সিএনজি চালকরা বলছেন, দূরের যাত্রায় পুলিশ ধরলে তিন হাজার টাকা জরিমানা করে, তাই কাছাকাছি হলে যাত্রী তুলছেন তারা।
আইএইচআর/এসএস/জেআইএম