অক্সিজেন সঙ্কট নিরসনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর তিন ফর্মুলা
দেশের হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি।
পদ্ধতি তিনটি হলো- সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ, অক্সিজেন লিকুইড ট্যাঙ্ক স্থাপন এবং তিনটি ব্যাক আপ লাইনের মাধ্যেমে অক্সিজেন জেনারেটর স্থাপন।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) অনলাইন জুম অ্যাপে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)-এর উদ্যোগে ‘কোভিড মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি প্রস্তুতি ও অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক ভার্চুয়াল সভায় বক্তৃতকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, করোনার সংক্রমণে অক্সিজেনের সঙ্কট নিরসনে প্রথমত- পুরোনা যে পদ্ধতি সিলিন্ডারের মাধ্যমে পাইপ লাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করা (যেটা প্রত্যেক হাসপাতালেই আছে, এ সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত)। দ্বিতীয়ত- অক্সিজেন লিকুইড ট্যাঙ্ক একবার ভর্তি করতে পারলে ৪০০-৫০০ বেডের হাসপাতালে ১৫ দিন নিরবিছিন্নভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়। তৃতীয়ত- অক্সিজেন জেনারেটর। যার মাধ্যমে বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করা যায এবং পাইপ লাইনের মাধ্যমে তা রোগীদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে অক্সিজেন জেনারেটর নষ্ট হতে পারে, ব্লাস্ট হতে পারে কিংবা যেকোনো কারণে বিকল হতে পারে। এজন্য অক্সিজেন জেনারেটরের তিনটি লাইন মজুত থাকতে হবে, যাতে করে ফার্স্ট লাইন বিকল হলে সেকেন্ড, থার্ড লাইন চালু থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ে দেশের মানুষের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিরলস প্রচেষ্টায় আমরা এখন এমন একটা অবস্থানে দাঁড়িয়েছি যে সঙ্কট আরও বাড়লেও আমরা তা সামলাতে পারব।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণমুক্ত হতে চাইলে যত বেশি মানুষকে সম্ভব টিকা দিতে হবে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকার সঙ্কট দেখা দেয়ায় বিকল্প টিকার উৎসের সন্ধান করতে হবে। ইতোমধ্যেই সরকার চীনের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা শিগগিরই পাঁচ লাখ ডোজ টিকা দেবে। রাশিয়ার স্পুতনিক টিকার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এই টিকাও চলে আসবে। দেশীয় বঙ্গভ্যক্স টিকা তৈরির ব্যাপারেও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) অনুমোদন দিয়েছে।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, পৃথিবীতে যত প্যানডেমিক হয়েছে, ততোগুলো টিকাদানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। আমাদের ৬০-৮০ শতাংশ জনগনকে টিকা নিয়ে করোনার সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আমরা অক্সিজেনের ব্যাপারে ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। ভারত থেকে রিফিল অক্সিজেন অনার পর সিলিন্ডারগুলো রিফিল হতো। আমাদের অক্সিজেন লিকুইড ট্যাঙ্কে সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে ভারতে অক্সিজেনের ক্রাইসিস বলে আমাদের দেশেও অক্সিজেন নিয়ে কিছুটা অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। পরনির্ভরশীলতা কমাতে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে।
এমইউ/এএএইচ/এএসএম