জনস্রোতের বদলে সুনসান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন
সাশ্রয়ী যাতায়াত ব্যবস্থা ট্রেনের কদর দুই ঈদে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আপনজনদের টানে ট্রেনে করে মানুষ রাজধানী ছেড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে-ছিটয়ে পড়েন। এ কারণে ভিড়ে ঠাসা থাকে ট্রেন। ঢাকার প্রধান দুই রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুর ও বিমানবন্দর থাকে লোকে-লোকারণ্য। ভেতরে ঠাঁই না পেয়ে ট্রেনের ছাদেও চড়েও নাড়ির টানে ঘরে ফেরেন অনেকে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ঈদুল ফিতরের মত এবারও ট্রেন বন্ধ। ফলে স্টেশনগুলো এখন জনশূন্য।
বুধবার (১২ মে) বেলা ১১টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখে গেছে, সব কিছু যেন থেমে আছে। মহামারি করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ৫ এপ্রিল থেকে সকল যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে গতবারের মতো এবার ঈদুল ফিতরেও কেউ নেই স্টেশনে। ফাঁকা স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম ও ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের কক্ষও। লাইন রাখা আছে ফাঁকা ট্রেন। নেই যাত্রীদের কোলাহল, হুড়োহুড়ি, ট্রেনের হুইসেল। কুলি ও হকারদের হাকডাকও নেই। তবে স্টেশনটিকে পরিস্কার-পরিছন্ন রাখার জন্য কর্মীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তারা পাইপের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে আর ঝাড়ু নিয়ে পরিস্কার রাখছেন প্লাটফর্ম। রয়েছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন।
সেখানে দায়িত্বরত একজন নিরাপত্তারক্ষী বলেন, লোকজন নেই। কিন্তু আমাদের ডিউটির তো মাফ নেই। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আমাদের ডিউটি। এরপর অন্য শিফট চালু হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবাই জানেন ট্রেন বন্ধ। তাই স্টেশনেও কেউ আসছেন না।
স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার টেলিফোনে জাগো নিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে আবার কবে ট্রেন চালু হবে। তবে মালবাহী ট্রেন চলছে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত এলেই আমরা জানিয়ে দেব।
দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর গত বছর দুই মাসের বেশি সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। গত বছরের ৩১ মে থেকে অর্ধেক আসন খালি রেখে সীমিতপর্যায়ে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। সীমিত আকারে প্রায় সাড়ে ৩ মাস চলার পর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকার কর্তৃক পরিচালিত দেশের একটি মুখ্য পরিবহন সংস্থা। প্রায় ২৫ হাজার নিয়মিত কর্মচারীসহ রেলওয়ের মোট দুই হাজার ৯৫৫ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার রুট রয়েছে। দেশের এক প্রান্তকে অন্যপ্রান্তের সঙ্গে সংযোজন করার জন্য রেলপথ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থলপরিবহন ব্যবস্থা। তাই রেলপথের সার্বিক উন্নতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এইচএস/এএএইচ/এমকেএইচ