করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সক্ষম হচ্ছি : শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘তৃণমূল উদ্যোক্তারা যেভাবে অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন, তাতে করোনা মহামারির মধ্যেও অর্থনীতির চাকা চলমান রয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রথম করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদানে সক্ষম হয়েছে। এ টিকা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। সব মিলিয়ে করোনার প্রথম ঢেউ যেভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে, সেভাবেই আমরা দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে সক্ষম হচ্ছি।’
এসএমই ফাউন্ডেশনের ‘ক্রেডিট হোল সেলিং’ ঋণ কর্মসূচির উদ্বোধন এবং ঋণের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিল্পমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনীতি সচল থাকলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ প্রদানে যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। মহামারির মধ্যে জাতীয় অর্থনীতি সচলের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের আরও যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, সত্যিকারে যারা প্রণোদনা পাওয়ার যোগ্য, তারাই যেন প্রণোদনা ঋণ পায়। প্রণোদনা ঋণ পেতে উদ্যোক্তারা যেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অযথা হয়রানিরে স্বীকার না হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে করোনা মহামারির প্রভাব সফলভাবে মোকাবিলা করে আমরা অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতিও আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের হাতেই প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ তুলে দিতে হবে। বিশেষ করে প্রান্তিক নারী ও শারীরিকভাবে অক্ষম উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দিয়ে এই ঋণ বিতরণ করতে হবে। তৃণমূল উদ্যোক্তারা উপকৃত হলেই এসএমই খাতের প্রকৃত উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন- ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিয়াউল হাসান মোল্লা। এতে অন্যদের মধ্যে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংক এশিয়ার পক্ষ থেকে দুইজন নারীসহ মোট আটজন উদ্যোক্তার মাঝে ৬৩ দশমিক ৯০ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উদ্যোক্তাগণ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের পরিমাণ হবে সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ২৪টি সমান মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে চলতি অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা এবং আগামী অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। এই ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সরকার নির্দেশিত সব ধরনের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। ইতোমধ্যেই ১১টি ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। প্রণোদনা প্যাকেজের মোট ঋণের ২৫-৩০ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এনএইচ/জেডএইচ/জিকেএস