সপ্তাহের ব্যবধানে করোনায় মৃত্যু বেড়েছে ২৫ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৭ এএম, ০৬ জুন ২০২১

গত বছরের মার্চে দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস শনাক্তের কয়েক মাস পর দেশে সংক্রমণের মাত্রা কমে গিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে এসে দ্বিতীয়বারের মতো সংক্রমণের ঊর্ধগতি দেখা দেয়। এরপর বিভিন্ন কড়া পদক্ষেপের কারণে এপ্রিল ও মে মাসে সংক্রমণের পারদ কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। তবে গত এক সপ্তাহে তা ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৩ থেকে ২৯ মে এই এক সপ্তাহে দেশব্যাপী এক লাখ ৯ হাজার ৬৫১টি নমুনা পরীক্ষা হয়। তাদের মধ্যে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন মোট ৯ হাজার ৬৬০ জন এবং ওই সপ্তাহে মৃত্যু হয় ২০১ জনের। পরের সপ্তাহ অর্থাৎ ৩০ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৯ হাজার ২০২টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ১১ হাজার ৯২৮ জন। মৃত্যু হয় ২৫২ জনের।

তুলনা করলে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। মূলত দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনের প্রবেশে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়।

এই পরিস্থিতিতে কোয়ারেন্টাইন ও জেলাভিত্তিক কঠোর লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশে ভারতীয় ধরনের সংক্রমণ

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় চলতি বছর। গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যু হয় গত বছরের ১৮ মার্চ। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৮০১ জনের। গত ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এরই মধ্যে ‘ডেলটা’ হিসেবে পরিচিত করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন সম্প্রতি দেশে ঢুকে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্ট মহল।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইদেশি মিলে মধ্য মে থেকে যেসব করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্স করেছে, তার ৮০ শতাংশেই মিলেছে এ ভাইরাসের ভারতীয় ধরনের সঙ্গে। সীমান্তবর্তী এলাকা ছাড়াও রাজধানীতে মিলেছে এ ধরনটির সংক্রমণ। আইইডিসিআরের ধারণা, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ‘ডেলটা’ ধরনটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে ২২টি জেলায় সংক্রমণের হার বেড়েছে। তার মধ্যে ১৫টিই সীমান্তবর্তী জেলা। ইতোমধ্যে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্টই না, এবারের ঈদুল ফিতরে ঢাকা থেকেও যারা এসব জেলায় গিয়েছেন, তাদের মধ্যেও অনেকেই ভাইরাস বহন করে নিয়েছেন বলে ধারণা করা যায়।

এসএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।