লকডাউনেও সড়কে যানজট, অফিসগামীদের দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, ২৯ জুন ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলছে সীমিত পরিসরে লকডাউন। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে খোলা আছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। অফিসগুলোকে তাদের কর্মীদের আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হলেও তা করেনি অনেক প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তিগত গাড়ি, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, রিকশায় চড়ে অফিসে বা ব্যক্তিগত কাজে ছুটেছেন মানুষ। রাস্তায় দেখা গেছে, চিরচেনা যানজট। সকাল থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন অফিসগামী যাত্রীরা।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাজধানীর বনানী, খিলগাঁও, মাগবাজার, মালিবাগ, ডিআইটি রোড, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকায় এই চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, রিকশা চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকলেও, দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকছেন চালকেরা। ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে কোনো বাধা নেই। অফিসের উদ্দেশে বা ব্যক্তিগত বিশেষ প্রয়োজনে বের হয়েই যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তির মুখে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে অনেকেই ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, রিকশা খুঁজেছেন। রাস্তায় যেকোনো গাড়ি দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা।

jagonews24

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবরার রাজুর সঙ্গে কথা হয় গুলশান ১ এলাকায়। মোহাম্মদপুর থেকে রিকশায় চার দফায় তিনি গুলশানে এসেছেন। এতে তার ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘লকডাউন শুরু করলে অবশ্যই অফিস বন্ধের নির্দেশনা দেয়া দরকার। অফিস চালু থাকলে যাতায়াতে যে ভোগান্তি হয়, এটা তো নীতিনির্ধারকরা বোঝেন না। লকডাউন মাসব্যাপী চললে বেতনের একটা বড় অংশ যাতায়াতে চলে যাবে। এটা অফিস বহন করবে না।’

চাহিদার তুলনায় সড়কে কম যানবাহন চলাচল করলেও বিভিন্ন সড়কে ট্রাফিক জ্যামের দেখা মেলে। সকাল ১০টায় বনানী ব্রিজে যানজট দেখা যায়। থেমে থেমে চলাচল করতে হয়েছে যানবাহনগুলোকে।

jagonews24

কোনো যানবাহন না পেয়ে পণ্যবাহী যানবাহনে চড়েও কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে অনেককে। গণপরিবহন সঙ্কটে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেই অনেকে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের দিকে।

সকাল ১০টায় বারিধারায় কথা হয় গুলশানগামী এক অফিসকর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা থেকে হেঁটে এসেছি। রিকশা, সিএনজি কিছুই পাচ্ছি না। দুই একটা রিকশা পেলেও তারা দ্বিগুণ, তিনগুণ ভাড়া হাঁকছেন। অফিসে পৌঁছাতে হাঁটা ছাড়া কোনো উপায় নেই। সকাল সাড়ে ৯টায় বের হয়েছি। আর আধা ঘণ্টা হাঁটলে অফিসে চলে যেতে পারবো।’

সাদ নাবিল রহমান নামের এক বিপণন কর্মকর্তাকে শেওড়াপাড়ায় রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। খালি কোনো রিকশা পাচ্ছি না। এভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে জানি না।’

এদিকে, করোনা সংক্রমণ রোধে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া অন্য কোনো আরোহী বহন না করতে গতকাল (২৮ জুন) অনুরোধ জানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে আজ এই নির্দেশনা না মানায় রাজধানীর চিটাগাং রোড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ।

jagonews24

এর আগে রোববার (২৭ জুন) তিন দিনের লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সোমবার সকাল ৬টা থেকে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ বিধি-নিষেধ কার্যকর থাকবে। এরপর ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনে যাবে গোটা দেশ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগের বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কিছু শর্তাবলী সংযুক্ত করে ২৮ জুন সকাল ৬টা থেকে থেকে ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

এসএম/এমআরআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।