যাত্রাবাড়ীর মহাসড়কে রিকশা চলতে দিচ্ছে না পুলিশ
যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রোববার (১১ জুলাই) সকাল থেকে রিকশা চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন পয়েন্টে রিকশা আটকে দেয়া হয়েছে। এমনকি রোগীবাহী রিকশাও আটকে দেয়া হচ্ছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে গিয়ে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে এই পরিস্থিতি দেখা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিধি-নিষেধের মধ্যে এই মহাসড়কে রিকশা অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই রিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে, মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর দিকে যাওয়ার পাশে বিপুল সংখ্যক রিকশা আটকে দিয়েছে পুলিশ। এখানে কদমতলী থানার পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। অনেক রিকশা উল্টো করে রাখা হয়েছে।
রিকশা আসলেই পুলিশ কোনো কথা না শুনে যাত্রী নামিয়ে রিকশা উল্টে রাখছিলেন। রিকশার অনেক যাত্রী প্রেসক্রিপশন দেখালেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত করছিলেন না।
মো. শাহ আলম তার বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাতে স্ত্রীসহ রিকশায় যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলেন। বাধার মুখে রিকশা থেকে নেমে তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আমার বাবু অসুস্থ ডাক্তার দেখাতে যাব।’ শাহ আলমের হাতে প্রেসক্রিপশনও ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা জবাবে বললেন, ‘নেমে অন্য কিছু দিয়ে যান।’
অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসান নামের একজন ব্যক্তি ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন। চিকিৎসার কাগজপত্র হাতে নিয়ে উত্তেজিত হয়ে বলছিলেন, ‘সরকার আমার চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। আপনি আটকাচ্ছেন কেন? এটা আপনি পারেন না।’
এখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক মো. কাছেদ মুন্সী। তিনি বলেন, ‘উপরের নির্দেশনা, ডিসি ওয়ারী বিভাগ থেকে নির্দেশনা এসেছে। কোনো রিকশা চলবে না। আমরা নির্দেশনা পালন করছি।’
রোগীবাহী রিকশাও আটকাতে বলেছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সিরিয়াস রোগী হলে নিচের রাস্তা দিয়ে যেতে দিচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই মহাসড়কে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রচুর রিকশা চলাচল করছে। সেজন্য লকডাউনেও লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছে। অনুমোদিত লোক ছাড়া আমরা রিকশা অ্যালাউ (অনুমোদন) করছি না। সেখানে আমরা রিকশা নিরুৎসাহিত করছি।’
রোগীবাহী রিকশাও পুলিশ আটকে দিচ্ছে- দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘না, রোগী চলাচলে বাধা নেই। ওরা হয়তো একটু ভুল বুঝেছে।’
উপ-কমিশনার আরও বলেন, ‘ওই হাইওয়েতে গত দু-তিন দিনে দু-তিনটা দুর্ঘটনা আছে। সেজন্য আমরা হাইওয়েতে রিকশা সেভাবে অ্যালাউ করছি না, হাইওয়েতে রিকশা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। পাড়া-মহল্লা ও অলিগলিতে রিকশা চলতে পারবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ ছিল ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ৭ দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ২১টি শর্ত দেয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী, এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা।
আরএমএম/এএএইচ/জিকেএস