লঞ্চ ছাড়বে রাতে, সকালেই ডেক দখল যাত্রীদের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২১

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে ওষুধ কোম্পানির কর্মচারি হারুনুর রশীদ। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টায় গাজীপুরের রাজাবাড়ি এলাকা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সদরঘাটে পৌঁছানোর আশা করলেও তা পারেননি। রাস্তায় যানজটের কারণে রাত ১০টায় সদরঘাটে পৌঁছান।

ঘাটে এসে দেখেন ভোলার সব লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে গেছে। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ওয়েটিং রুমে রাত কাটে তার। শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকেল বা সন্ধ্যায় লঞ্চে উঠবেন। তবে আগে থেকেই লঞ্চে উঠে বসে আছেন।

শুক্রবার সকালে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমি যেখানে চাকরি করি, সেখানে করোনার কারণে বেতন কমে গেছে। সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছি না। তাই স্ত্রী ও সন্তানকে গ্রামেই রেখে আসতে যাচ্ছি।

jagonews24

দুপুর ১২টায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘাটে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখা হয়েছে। বিকেলে বা সন্ধ্যায় লঞ্চ ছাড়ার সম্ভাব্য সময় নির্ধারিত থাকলেও সকাল থেকেই শত শত যাত্রী সদরঘাটে এসে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের লঞ্চের ডেকে আগাম জায়গা দখল করে চাদর বিছিয়ে বসে আছেন।

সেখানে শত শত যাত্রীদের কেউ বসে আছেন, কেউ নাস্তা করছেন। আবার কেউ ঘুমাচ্ছেন। কোনো যাত্রী মাস্ক ছাড়া ঘাটে প্রবেশ করতে পারবে না বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ মাইকিং করছে।

ঘাটে আসা যাত্রীসহ প্রায় সবার মুখে মাস্ক দেখা যায়। কিন্তু লঞ্চে ওঠার পরও মাস্ক অধিকাংশই মাস্ক খুলে ফেলছেন। তবে লঞ্চের প্রবেশ মুখে যাত্রীদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে দেখা যায়।

jagonews24

সাবরিনা বেগম নামের একজন গৃহবধূ জানান, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে জানার পরও বরিশালে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাই-বোনের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন। ঢাকায় টানা লকডাউনে ঘরবন্দি থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আগামী ৫ আগস্টের পরে ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

রাজধানীর নিউমার্কেটের ফুটপাতে জুতার হকার জহির মিয়া বরগুনাগামী লঞ্চে ডেকে বসে ছিলেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, করোনায় লকডাউনের কারণে রোজগার প্রায় বন্ধ। ঈদের আগে কয়েকদিন মার্কেট খোলা থাকায় ছেলেকে রেখে তিনি গ্রামে যাচ্ছেন। লকডাউনের পরে অবস্থা বুঝে ঢাকায় ফিরবেন।

jagonews24

তিনি জানান, সব সময় লঞ্চের ডেকে ভিড় থাকে। একটু আয়েশ করে বসে বা শুয়ে যাওয়ার জন্য অনেকেই আগেই ঘাটে এসে লঞ্চে উঠে বসে থাকেন। দুপুরের পর থেকে ভিড় আরও বাড়বে বলে তিনি জানান।

বিআইডব্লিউটিএ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে ঘাটে আসা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় বাধ্য করতে মনিটরিং চলছে।

এমইউ/এমএইচআর/এএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।