বাসের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষা, বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ
করোনার সংক্রমণরোধে দুই সপ্তাহের লকাডাউন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে চলছে দূরপাল্লার গণপরিবহন। আজ শুক্রবার (১৬ জুলাই) গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। আর সময়মতো বাস ছেড়ে না যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, অগ্রিম টিকিট কেটে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে বসে থাকলেও সময়মতো ছাড়ছে না বাস। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে বিরক্ত হচ্ছেন তারা।
তারা আরও বলছেন, কাউন্টার থেকে আসছে, আসবে বলে যাত্রীদের বুঝ দেয়া হলেও জানা গেছে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে বাস আটকে আছে৷ এ কারণে সঠিক সময় ছাড়ছে না বাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শম্পা গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন সকাল সাতটার কিছু আগে। যশোরের উদ্দেশ্যে তার বাস সুন্দরবন এক্সপ্রেসের ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল সাতটায়। তবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বাসের কোনো হদিস মেলেনি।
শম্পা বলেন, সকাল থেকেই কাউন্টার থেকে বলছে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসবে। সেই কিছুক্ষণ পাঁচ ঘণ্টাতেও শেষ হলো না।
বাসটির কাউন্টার মাস্টার জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাস এখনো চান্দুরার জ্যামে আটকে আছে। এখানে আসতে আসতে আরও এক ঘণ্টা সময় লাগবে। যানজটে তো আমাদের হাত নেই।’
এসবি ডিল্যাক্সের কাউন্টার মাস্টার জসিম বলেন, ‘গাড়ি সব আটকে আছে সিরাজগঞ্জ। এজন্য টাইমলি ছাড়ত পারছি না। যাত্রীদেরও কষ্ট হচ্ছে।’
হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার থেকে বলা হয়, গাড়ি জ্যামে আটকে আছে। আসলেই ছাড়া হবে।
নির্ধারিত সময়ে বাস না আসায় কাউন্টারগুলোর সামনে দীর্ঘ হচ্ছে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সারি। তীব্র গরমে শিশু, নারী ও বয়স্করা বেশ কষ্ট পাচ্ছেন।
মেহেরপুরগামী যাত্রী রাজন মজুমদার বলেন, ‘বাস সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। দুপুর হয়ে গেছে এখনো বাসের দেখা নেই। তীব্র গরমে বয়স্ক মা, আমার ছোট শিশু কষ্ট পাচ্ছে। কখন বাস ছাড়বে, কিছুই ধারণা করতে পারছি না।’
অন্যদিকে সরকার নির্দেশিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। শম্পা বলেন, ‘যশোর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া বাড়িয় ১০৫০ টাকা হওয়ার কথা কিন্তু ভাড়া রাখা হয়েছে ১২০০ টাকা।’
এসবি সুপারের জসিম বলেন, ‘আমাদের সব টিকিট অনলাইনে সেল হয়েছে। ভাড়া বেশি রাখার প্রশ্নই নাই। সরকার নির্দেশিত ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে রাখা হয়েছে।’
আনসার কর্মী শাহেদিন বলেন, ‘টিকে পরিবহনে দিনাজপুর পর্যন্ত ১৬০০ টাকা ভাড়া রাখা হচ্ছে। ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েও অতিরিক্ত ৪০০ টাকা রাখা হচ্ছে।’
এদিকে বাসগুলোতে জীবাণুনাশক ছিটানো, যাত্রীর হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়ার দৃশ্য চোখে পড়েনি। এছাড়া কিছু বাসে প্রত্যেক সিটেই যাত্রী নিতে দেখা গেছে।
এসএম/এমআরআর/জেআইএম