শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভারের আইসিউতে ৫২ শতাংশ রোগীর মৃত্যু
রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে এক বছর আগে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালু হয়েছিল। এখন ১৫০ শয্যার এই হাসপাতালে আর মাত্র ১০টি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। প্রতিদিন যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, শিগগিরই বাকি শয্যাগুলোও পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে এই হাসপাতালের ১৬ শয্যার আইসিইউতে গড়ে ৫২ শতাংশ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী মারা গেছেন। গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে আজ রোববার (২৫ জুলাই) সকাল পর্যন্ত মারা গেছেন তিন জন। সামনের দিনগুলোতে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে কিছুটা জনবল সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রায়ই চিকিৎসক এবং নার্সরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তখন চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরে জানিয়েছেন।
শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২০ সালের জুনে এই হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকে অন্যান্য বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। এখন হাসপাতালের প্রায় ১২০ জন চিকিৎসক এবং ২৬২ জন নার্স কয়েক শিফটে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
রোববার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের উত্তর পাশে রয়েছে জরুরি বিভাগ। সেখানে কিছুক্ষণ পরপরই অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী ভর্তির জন্য যাচ্ছেন। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়েও অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কয়েকজনকে চিকিৎসা নিয়ে বের হতেও দেখা গেছে।
গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কুমিল্লার দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জের চাঁন মিয়া (৭৫)। আজ তার ভাতিজা কাউসার বলেন, ‘এখন গ্রামেও করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে চাচার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। কাল নমুনা দিয়েছি। আজ বিকেলে রিপোর্ট দেবে।’
শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ফারুক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় কোনো ঘাটতি নেই। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় জনবল রয়েছে। তবে রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক এবং নার্স করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে অনেক সময় চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে। এখন করোনা মহামারি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সামনের দিনগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিয়ে খুবই আশঙ্কা কাজ করছে। এই সংকট থেকে বাঁচতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।’
এমএমএ/এমএইচআর/এমএস