মূল সড়কে মানুষ কম, আনাগোনা বেশি অলিগলিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০২ এএম, ২৭ জুলাই ২০২১

চলমান বিধিনিষেধে রাজধানীর মূল সড়কে তুলনামূলক কম মানুষ দেখা গেলেও অলিগলিতে আনাগোনা বেশ বেড়েছে। দিন যত যাচ্ছে এ জায়গাগুলোতে মানুষের আড্ডা তত বাড়ছে। বিধিনিষেধের শুরুতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কড়াকড়ি দেখা গেলেও ক্রমেই শিথিলতা তৈরি হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে এমন চিত্র দেখা গেছে রামপুরা, চৌধুরীপাড়া, মালিবাগ ও নয়াটোলা এলাকায়।

jagonews24

এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেইন রোডে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং অযাচিত চলাচল রোধে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকলেও অলিগলিতে সেলুন, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান খুলতে শুরু হয়েছে। সেখানে মানুষের আনাগোনাও বেশ। বিধিনিষেধে যেসব দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা ছিল অলিগলিতে সেগুলো খোলা। মাঝে মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হরেও তারা ফিরে গেলে আবারও খোলা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অলিগলির কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা মোটামুটি বাজার সাজিয়ে বসেছেন। সেখানে লোকজনের আনাগোনাও প্রচুর। ভিড় করেই অনেকে কিনছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা বাধছেন জটলা।

jagonews24

এদিকে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে সবচেয়ে বেশি চলছে রিকশা। পাশাপাশি প্রাইভেটকারের সংখ্যাও বেশ। তবে কিছু অফিসের কর্মী পরিবহনকারী গাড়ি ছাড়া, বড় গাড়ি দেখা যায়নি।

পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে কিছু কিছু প্রাইভেটকার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে। তবে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় কাউকে জরিমানা অথবা ফিরিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা লক্ষ্য করা যায়নি। এদিকে রিকশাযাত্রীদের সেরকম জিজ্ঞাসার মুখেও পড়তে হচ্ছে কম। এজন্য রাজধানী যেন রিকশার দখলে চলছে।

jagonews24

রিকশা নিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে আমজাদ আলী নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাগো কিছু পুলিশ কইব না। ঝামেলা ছাড়াই চালিয়ে যাই। মাঝে মাঝে ধরে, জিজ্ঞেস করে ছেড়ে দেয়।’

রামপুরা মোড়ে মেইন রাস্তায় যতটুকু ভিড়, তার থেকেও বেশি ভিড় মহানগর যাওয়ার রাস্তাটিতে। আর ওই রাস্তা থেকে বেরিয়ে যাওয়া পাশের গলিগুলোতে ভিড় আরও বেশি। সেসব গলিতে জটলা পাকিয়ে মানুষকে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলেও বেড়েছে ভিড়। খাবার পার্সেলে বিক্রির কথা থাকলেও অনেক হোটেলে ক্রেতাদের বসিয়ে খেতে দেখা গেছে।

গলিতে বেশ কিছু দোকানে শাটার নামিয়ে বা অর্ধেক খোলা রেখে ভেতরে কাজ চলছিল। দোকান খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে টেইলারিংয়ের একজন কর্মী বললেন, ‘একটা ড্রেস ডেলিভারি নেয়ার কথা, সেই কারণে একটু খুলছি। এখনই বন্ধ করে দেব।’

jagonews24

এদিকে আজ রাস্তায় মানুষের চলাচল দেখা গেছে গত কয়েক দিনের চেয়ে বেশ বেশি। থানা পুলিশের একটি দল একবার টহল দিয়ে যায়, কিন্তু তাদের বিদায়ের পর আবারও ভিড় বাড়ে রাস্তায়। খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে চলছে সবজি ও ফল বিক্রি।

রমজান নামে এক রিকশা চালক বললেন, ‘লকডাউনের প্রথম দুদিন কেউ বের হয়নি। আমিও ভয়ে রিকশা নিয়ে বের হইনি। পরে বাধ্য হয়ে বের হতে হয়েছে। সবাই হচ্ছে।’

রামপুরায় সকালে কাঁচাবাজারে আগের দিনগুলোর চিত্রই দেখা গেছে। পাশের সড়কের মাছ দোকানদার, সবজি দোকানদার, মুদি দোকানগুলোতে মানুষও অনেক। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কেউ কেউ, তবে অনেকের সেদিকে খেয়ালই নেই। বিক্রেতারা মাস্ক পড়ছেন কম।

কেন মাস্ক পারেননি এমন প্রশ্নের উত্তরে অধিকাংশ বিক্রেতা বলছেন, গরমের কারণে মাস্ক পরতে পারি না। অনেক কাস্টমারও মাস্ক পড়তে চান না। ক্রেতা এলে মাস্ক পরি।

এনএইচ/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।