এখন গণপরিবহন চললেই ষোলকলা পূর্ণ!
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে দেশব্যাপী চলমান বিধিনিষেধ কাগজে কলমে আগামী বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে শিথিল হওয়ার কথা। তার আগে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জন ও যানচলাচলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাস্তবে দুদিন আগেই রাজধানী ঢাকায় লকডাউন ‘ভোতা’ হয়ে গেছে।
পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথে অসংখ্য বিভিন্ন বয়সী লোকজন অবাধে চলাচল করছেন। রাজধানীর ছোট-বড় সব রাস্তায় প্রাইভেটকার, জিপগাড়ি, ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও রিকশা অবাধে চলাচল করছে। রাস্তায় এখন গণপরিবহন ছাড়া বাকি সব যানবাহনই চলাচল করছে। এখন বাস চললেই যেন যান চলাচলের ষোলকলা পূর্ণ হয়।
এদিকে কোনো কোনো রাস্তায় যানবাহনের আধিক্যের কারণে কিছু সময়ের জন্য যানজটও দেখা দেয়। সোমবার (৯ আগস্ট) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে। এ সময় সব ধরনের গণপরিবহনসহ ছোট-বড় মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ থাকে। মাঝে পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুসহ এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ঈদের পর ফের লকডাউন শুরু হয়।
শুরুর দিকে এই লকডাউন সফল করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগের ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে টহল জোরদার করা হয়। অত্যাবশ্যক জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তাকে টহল পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়। চেকপোস্টে যানবাহন আটকে তল্লাশি চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেল-জরিমানা করেন। কিন্তু গত ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসসহ রফতানীমুখী সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণার পর থেকে লকডাউন শিথিল হতে থাকে। ধীরে ধীরে রাস্তায় চেকপোস্টে তল্লাশিও বন্ধ হতে থাকে।
আজ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীরা আগামী বুধবার থেকে মার্কেট খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মার্কেটের মূল ফটকে তালা থাকলেও ভেতরে দোকানপাট ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে বেচাকেনা পুনরায় শুরুর প্রস্তুতি চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আগামী ১১ আগস্ট থেকে লকডাউন শিথিল হচ্ছে। সব ধরনের গণপরিবহন শর্তসাপেক্ষে চলাচল করবে। স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে লকডাউন উঠে গেলেও শতভাগ মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি ধীরে ধীরে সবাইকে টিকার আওতায় আনতে হবে।
এমইউ/এমআরআর/এএসএম