করোনা হাসপাতালের ৭৫ শতাংশ শয্যাই খালি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫৬ এএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১

রাজধানীর মহাখালীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১ হাজার ৫৪ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপ বহুলাংশে কমে এসেছে। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালটিতে সর্বসাকুল্যে মাত্র ২৬৯ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। যা মোট শয্যা সংখ্যার ৭৫ শতাংশের বেশি খালি ছিল।

এ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য তিন ক্যাটাগরিতে ৫৫৪টি সাধারণ শয্যা, ২১২টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) এবং ২৮৮টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) শয্যা রয়েছে।

বুধবার পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৫৫৪টি সাধারণ শয্যার একটিতেও রোগী ভর্তি নেই। ২১২টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) শয্যার মধ্যে ১৩৪ জন ও হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) ২৮৮টি শয্যার মধ্যে ১৩৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।

মাসখানেক আগেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায়। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি হাসপাতালের সামনে মুমূর্ষু ও অপেক্ষাকৃত কম মুমূর্ষু করোনা রোগীর স্বজনরা ভর্তির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতেন। শয্যা সংকটে ভর্তি না হতে পেরে কেউ অন্য সরকারি হাসপাতালে ছুটতেন কেউবা আবার অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী রেখে অপেক্ষার প্রহর গুনতেন। বিশেষ করে আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার জন্য লাইন লেগে থাকতো। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ যাবত করোনা সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় রোগীর চাপ ক্রমশ কমছে।

শুধু ডিএনসিসি হাসপাতাল নয়, রাজধানীর ১৭টি সরকারি ডেডিকেটেড হাসপাতালের প্রায় প্রত্যেকটিতে কিছুদিন আগের তুলনায় বর্তমানে রোগীর চাপ এখন অনেক কম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকারি ১৭টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ, আইসিইউ ও এইচডিইউর তিন ক্যাটাগরিতে সর্বমোট শয্যা সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯টি। এরমধ্যে বর্তমানে ৩ হাজার ৪৭টি শয্যা খালি। শতাংশের হিসেবে প্রায় ৬০ শতাংশ শয্যাই খালি।

এছাড়া বেসরকারি ২৯টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ, আইসিইউ ও এইচডিইউর তিন ক্যাটাগরিতে সর্বমোট শয্যা সংখ্যা ২ হাজার ৬৪২টি। বর্তমানে ১ হাজার ৯২২টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ১ হাজার ৪০১টি, ৪৯৫টি আইসিইউর মধ্যে ৩৯০টি এবং ২২৫টি এইচডিইউর মধ্যে ১৭০টি শয্যা খালি ছিল। যা সর্বমোট শয্যার ৭৪ শতাংশ শয্যাই রোগীশূন্য।

ডিএনসিসি হাসপাতাল পরিদর্শনকালে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২০ ঘণ্টায় হাসপাতালটিতে ১২ জন করোনা রোগী ভর্তি হন। একই সময়ে ৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালটির অধিকাংশ বেডই ফাঁকা। দুঘণ্টা অবস্থানকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাত্র একজন রোগীকে নিয়ে আসতে দেখা যায়। রোগীর চাপ কমার পাশাপাশি কমেছে রোগীর লোকদের সতর্কতাও। তাদের অনেককেই রোগীর পাশে বসে থাকতে ও হাঁটাচলা করতে দেখা যায়।

সুমন দাস নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, আগের মতো আর ভয় নেই। আপনজনের সেবা করতে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মানা কঠিন।

কুমিল্লা থেকে আসা আবু তাহের নামে আরেক ব্যক্তি জানা, তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার দেড় মাস ধরে ভর্তি। আইসিইউতে ছিলেন। এখন ভালো।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, ১২ আগস্টের পর থেকে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমেছে। এর আগে প্রতিদিন গড়ে যেখানে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি হতো সেখানে এখন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন ২৫-৩০ জন।

রাসেল/মিরাজ/মাজহার/এসজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।