সেই উপসচিব লোকমান হোসেনের বেতন কমলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

সরকারি বাসভবনের প্রতিবেশী অন্যান্য কর্মকর্তাকে হুমকি, মিথ্যা পরিচয়, খারাপ ব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ ছিল উপসচিব মো. লোকমান আহমেদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ প্রমাণিতও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন বছরের জন্য তার বেতন গ্রেড নিম্নতর ধাপে নামিয়ে আনা হয়েছে।

সম্প্রতি লোকমান হোসেনকে লঘুদণ্ড দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এই উপসচিবের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে। রাজধানীর রমনা ও মতিঝিল থানায় তার বিরুদ্ধে ১২টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়। পরে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১৫ এপ্রিল লোকমান আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত দণ্ড দেওয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসচিব (সাময়িক বরখাস্ত হওয়া) লোকমান আহমেদ বেইলি স্কয়ার অফিসার্স কোয়ার্টারের একটি বাসায় বসবাস করেন। তার পার্শ্ববর্তী বাসায় বসবাসকারী ডা. শেখর কুমার মন্ডল ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ এবং নিজেকে সচিব বা যুগ্মসচিব বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ের মাধ্যমে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৫ এপ্রিল অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারির মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়।

এতে বলা হয়, লোকমান আহমেদ গত বছরের ২০ মে লিখিত জবাব দিয়ে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করলে ২৯ জুন ব্যক্তিগত শুনানি হয়। শুনানিতে দেওয়া মৌখিক বক্তব্য ও লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদনে লোকমান আহমেদের বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে মতামত দেন।

তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে লোকমানের বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তাকে ফের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর লিখিতভাবে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব দেন তিনি। পরে জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনা করে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী তাকে ‘তিন বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ’র লঘুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, দণ্ডের মেয়াদকালে লোকমান হোসেন ‘জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫’ এর গ্রেড-৫ (টাকা ৪৩০০০-৬৯৮৫০/-) এর ৪৩০০০ টাকার ধাপে বেতন পাবেন। তিনি ভবিষ্যতে এই মেয়াদের কোনো বকেয়া পাবেন না এবং এই মেয়াদ বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনা করা যাবে না।

একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার সাময়িক বরখাস্তকাল অ-সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএমএম/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।