করোনা টিকার দাম মনে নেই: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা টিকার দাম মনে নেই বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত সরকার প্রায় ৩০ কোটি ৫০ লাখ করোনা টিকা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ১৮ কোটি টিকা নগদ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। বাকিগুলো কোভেক্সের আওতায় বিনামূল্যে পেয়েছি। তবে দামগুলো এখন মনে নেই। এ বিষয়ে আমাকে নোটিশ দিলে এর দাম এবং কোথা থেকে এসেছে সেটা বলতে পারবো।
রোববার (৫ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মুজিবুল হক চুন্নু এ পর্যন্ত কত ভ্যাকসিন সংগ্রহ, কোথা কোথা থেকে সংগ্রহ এবং এর দাম কত পড়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে জানতে চান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রশ্নের উত্তরে জাহিদ মালেক বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত দিলে পরে আমি বিস্তারিত জানাতে পারবো। তবে এখন পর্যন্ত সাড়ে ত্রিশ কোটি করোনা টিকা সরকার সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ২৬ কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে। এক ডোজ করে টিকা দেওয়া হয়েছে ১৩ কোটি মানুষকে, দুই ডোজ করে দেওয়া হয়েছে পৌনে ১২ কোটি ও দেড় কোটি মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সেটা এখনো চলছে।
এর আগেও সংসদে একাধিকার করোনার টিকার দাম জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদকে জানাতে চাননি। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘নন-ক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’–এর মাধ্যমে টিকা কেনায় সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।
এদিকে, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নোত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে কোভিড টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৫ বছরের ওপরের সব জনগোষ্ঠীকে পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত (১ জুন ২০২২) ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩৬টি প্রথম ডোজ, ১১ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭১ টি দ্বিতীয় ডোজ ও ভাসমান জনগোষ্ঠীকে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৯১৮টি টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এক কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ৬১০টি বুস্টার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
সরকারি দলের আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদিত হয়। বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের ওষুধ রপ্তানি করা হয়। চলতি অর্থ বছরের (২০২১-২২) এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৪০৯ টাকার ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে সম্পূরক প্রশ্নে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪১ শতাংশ ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান-
কী কারণে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করা যায়নি?
জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে কিছু কাজ ব্যাহত হয়েছে। এ খাতে শ্রমের মূল্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটের ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি জুন মাস শেষের আগে ৯০ শতাংশের বেশি খরচ হয়ে যাবে ও লক্ষ্য অর্জন হয়ে যাবে। কারণ এখনো অনেকগুলো বিলের অর্থ পরিশোধ হয়নি। অনেকগুলো মাল এখনো পৌঁছায়নি, যার বিলগুলো দেওয়া হয়নি। এগুলো এই জুনের আগে সমাধান হয়ে যাবে।
এইচএস/আরএডি/জিকেএস