বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই উদযাপিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এ ঈদের নামাজের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। এরইমধ্যে ঈদের প্রধান জামাতের জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, স্বাধীনতার আগে থেকেই হাইকোর্টের পাশের জায়গাটি ছিল ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ। সেই জায়গায় ছিল একটি পুকুর। ১৯৮১-৮২ সালের দিকে সেই ঝোপ-জঙ্গল কিছুটা পরিষ্কার করা হয়। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি মাজার। জায়গাটি একটু পরিচিত হয়ে উঠলে সেখানে ছোট পরিসরে শামিয়ানা টাঙিয়ে ঈদের নামাজ পড়ানো শুরু হয়। ১৯৮৫ সালের দিকে সেই পুকুরটি ভরাট করে কর্তৃপক্ষ। পরে ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ওই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।
এরপর থেকে নিয়মিত এই ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। দু’বছর পর চলতি বছরের মে মাসে আবার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের সেই জামাত ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ওই ঈদের জামাতে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে নামাজ আদায় করেন।
ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের জন্য আবার প্রস্তুত করা হচ্ছে এই মাঠ। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সরেজমিনে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যেই একদল শ্রমিক মাঠের মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুঁতে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন। একদল খুঁটির ওপর লম্বালম্বি বাঁশ বেঁধে ছাউনির কাজ করছেন। পাশাপাশি কয়েকজন মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছনের কাজ করছেন। এদের সঙ্গে কয়েকজনকে দেখা যায় রঙের কাজ করতে।
ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দু-একদিন আগে মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে। এরই মধ্যে মাঠের অর্ধেকের বেশি জায়গাজুড়ে বাঁশের খুঁটি পোতার কাজ শেষ হয়েছে। খুঁটি পুতে বাঁশের ছাউনি দেওয়া শেষ হলে তার ওপর ত্রিপল বিছিয়ে ছাউনি দেওয়া হবে।
মাঠে খুঁটি পোতার কাজ করা মো. মাজেদ জানান, কুমিল্লা থেকে এখানে কাজ করতে এসেছেন তিনি। আজ থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। মাজেদ বলেন, আমরা এখানে বাঁশের কাজ করবো। আমাদের কাজ শেষ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে। আমাদের কাজ শেষ হলে তারপর বাঁশের ওপর ত্রিপল বিছানোর কাজ করবেন অন্য শ্রমিকরা।
জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রঙের দায়িত্বপালন করা মো. মাহবুব নামের আরেক শ্রমিক জানান, তারাও আজ থেকে কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাজ ঈদগাহ মাঠের বাউন্ডারি ওয়াল ও মাঠের ভেতরে রঙ করা। আমরা আজ থেকে কাজ শুরু করেছি। একদিকে মাঠে বাঁশের কাজ চলবে, অন্যদিকে আমাদের রঙের কাজ চলবে। আমাদের কাজ শেষ হতে আরও এক সপ্তাহ লেগে যাবে। সবমিলিয়ে ঈদের এক-দুইদিন আগে মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে।
মাঠের ভেতরে পলিথিনের ছাউনি বানিয়ে কয়েকজনকে বসে গল্প করতে দেখা যায়। তাদের একজন মোরশেদ আলম বলেন, বৃষ্টির কারণে আমাদের কাজে একটু সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যেও আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ঈদের আগেই আমরা আমাদের সব কাজ শেষ করে মাঠ ঈদের জামাতের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করবো।
এমএএস/এমআইএইচএস/কেএসআর/জেআইএম