একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব, মানবজীবনে বাড়ছে অনিশ্চয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১২ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২২

বর্তমান বিশ্ব পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে মানুষের জীবনে যুক্ত হয়েছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা। এতে উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্রগতির ধারাবাহিকতা হয়ে গেছে বিপরীতমুখী।

পৃথিবীর বিপজ্জনক পরিবর্তন, ব্যাপক সামাজিক রূপান্তর এবং বর্ধিত মেরুকরণ হলো মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০২২ এ উল্লেখিত অনিশ্চয়তার তিনটি উৎস। এগুলো জনজীবনে মারাত্মক চাপ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। জেনারেশন জি, যারা ‘চেঞ্জমেকারস অব টুমরো’, তাদের জন্য এর পরিণাম হতে পারে আশঙ্কাজনক। বিশেষত বাংলাদেশের মতো দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদজনক পরিস্থিতির হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এনগেজিং ইয়ুথ ইন শেপিং বাংলাদেশ'স ফিউচার ইন এ ট্রান্সফর্মিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।

এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আয়োজক প্রতিষ্ঠানের তরুণ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ বছরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে, সেসবের প্রভাব সম্পর্কে তরুণদের মনোজগত সম্পৃক্ত করতে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন। সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, এ সেমিনার তরুণ-তরুণীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং জলবায়ু পরিবর্তন, যুব কর্মসংস্থান, মানসিক সুস্থতা, দক্ষতা উন্নয়ন, অসমতা, দ্বিধাবিভক্ত সমাজের চারপাশে আবর্তিত অনিশ্চয়তার দ্বারা কীভাবে তাদের জীবন প্রভাবিত হয় সেটা বোঝার একটি উপায়।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার উদ্বোধনী অধিবেশনে বলেন, আমরা আমাদের জীবন, চারপাশের মানুষ, প্রাণীজগৎ এবং সামগ্রিক পরিবেশ সম্পর্কে কী বেছে নিচ্ছি তার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। আমি মনে করি, তরুণ-তরুণীদের দৃষ্টিভঙ্গি, শক্তি এবং অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ বাংলাদেশের সবার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

এদিন প্যানেল অধিবেশনে উল্লিখিত তিনটি থিম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও বিআইজিডির রিসার্চ ফেলো ড. রোহিনী কামাল ‘প্ল্যানেটারি ডেঞ্জারস অ্যান্ড রেসাল্টান্ট আনসার্টেনিটিস’ থিম সম্পর্কে আলোচনায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মতামত নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সামনে নিয়ে আসতে হবে। স্থানীয় উদ্যোগ ও সমাধানের পন্থা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি।

jagonews24

ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ ‘পোলারাইজড সোসাইটিজ অ্যান্ড ইমপ্লিকেশনস ফর ডিসিশন মেকিং ফর অল’ থিম সংক্রান্ত আলোচনায় মত দেন।

তিনি বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতের পার্থক্য থাকবেই। কিন্তু আমাদের উচিত শিক্ষা, স্বীকৃতি ও প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে এসব পার্থক্যকে সম্মান করা। এর মাধ্যমেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারবো। একই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তির দৃষ্টিভঙ্গি কমাতে সক্ষম হবো।

‘ট্রান্সফর্মেশন ইন সোসাইটি গ্লু ইনোভেশন’ থিম নিয়ে আলোচনার সময় বিডিজবস ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী একেএম ফাহিম মাশরুর প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি- এ দুটি বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনতে জোর দেন।

প্যানেল আলোচনার পর অংশগ্রহণকারীরা তাদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ছাত্রী তাজরিয়ান আলম বলেন, স্থানীয় সমাধান খুঁজতে এবং পরবর্তীকালে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তরুণরা কমিউনিটি এবং তৃণমূল পর্যায়ে আরও কার্যকরভাবে জড়িত হতে পারে।

ইয়ুথ পলিসি ফোরামের অ্যাডভোকেসি লিড গোলাম মোস্তফা শুভ অ্যালগরিদমকে পছন্দ করতে দেওয়ার পরিবর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের প্রকাশ করা বিষয়বস্তু সক্রিয়ভাবে বেছে নেওয়া উচিত বলে মত দেন।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি রিসার্চ ফর ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের সভাপতি ল্যাবি হাসান বলেন, যদিও সীমিত, তবে আমাদের চারপাশে শেখার, অন্বেষণ করার এবং উদ্ভাবনের অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের কেবল তাদের খুঁজে বের করতে হবে।

এএএম/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।