যৌন হয়রানির দায়ে শাস্তি ‘তিরস্কার’ পেলেন ইউএনও

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২২
ইউএনও অমিত চক্রবর্ত্তী

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকার সময় অমিত চক্রবর্ত্তীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে শাস্তি হিসেবে লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ করা হয়েছে।

গত ১৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ শাস্তির কথা জানানো হয়।

অমিত চক্রবর্ত্তী বর্তমানে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুরের ইউএনও হিসেবে কর্মরত। তিনি কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকার সময় উপজেলার নারী এসিল্যান্ডের মেসেঞ্জারে অশোভনীয় চ্যাটিং করাসহ নানাভাবে তাকে যৌন হয়রানি করেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের চররাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্ত্তী ২০২১ সালের ২৫ জুলাই থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার অধীন কর্মরত একজন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে অশোভন আচরণ করা, তার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভন কথোপকথন, তার স্বামী যেন বদলি হয়ে নীলফামারী জেলায় যেন না আসেন সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগসহ তার বাচ্চা যেন রংপুরে থাকে, তিনি স্টেশনে থেকে চাকরি করেন সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগ, তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও বডি স্প্রে কিনে দেওয়া, রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলা, ফোন দিয়ে ভারসাম্যহীন ও অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলা, রাত ৮টা থেকে ৯টায় অফিসে কোনো কাজ না থাকলেও অফিসে বসিয়ে রাখা, তাকে মাস্ক পরে তার সামনে বসতে নিষেধ করা, বন্ধের দিনে ফোন ওয়েটিংয়ে থাকা নিয়ে চাপ প্রয়োগ করার মতো শিষ্ঠাচারবহির্ভূত আচরণ এবং একজন নারী সহকর্মীর সঙ্গে খুবই অশোভন আচরণ করার অভিযোগে ওঠে। এরপর তার বিরুদ্ধে এ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় মামলা করা হয়।

আরও বলা হয়, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়। ব্যক্তিগত শুনানিকালে সরকার পক্ষের নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা নীলফামারী জেলা প্রশাসনের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. আব্দুর রহমান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অভিযোগ বিবরণীর বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, একজন নারী জুনিয়র সহকর্মীর সঙ্গে এমন অশালীন ও দৃষ্টিকটু আচরণ কাঙ্ক্ষিত নয়।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযোগকারীর সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভনীয় কথোপকথন/চ্যাটিং করা এবং তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে বডি স্প্রে কিনে দেওয়ার মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কর্তৃক অসদাচরণ সংঘটনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

এরপরও ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৪(২) (ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএমএম/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।